চাকরির পরীক্ষায় পাস করানোর চক্রে জড়িয়ে পড়ায় রাজশাহীতে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও দুই কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতারণার অভিযোগে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা হয়েছে। পরে তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পুলিশের এএসআই গোলাম রাব্বানী (৩৩), কনস্টেবল আবদুর রহমান (৩২) ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল (৩১)। আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। এএসআই গোলাম রাব্বানী কর্মরত ছিলেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানায়। তিনিও আগে পুলিশ কনস্টেবল ছিলেন। তখন ছিলেন আরএমপিতে। পরে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হয়ে দিনাজপুর যান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার আগে একটি প্রতারকচক্রের সঙ্গে পুলিশের এই সদস্যরা ১৫-২০ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেন। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে খুবই ছোট আকারের হেডফোন সরবরাহ করেন। এই হেডফোনের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার করে চুক্তি করা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল চেক এবং স্ট্যাম্প। পুলিশের অভিযানে কিছু স্ট্যাম্প, একটি ১০ লাখ টাকার চেক এবং ১৪টি গোপন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতে প্রতারকচক্রের সঙ্গে এই পুলিশ সদস্যদের এমন তৎপরতার বিষয়ে জানতে পেরে প্রথমেই আরএমপি সদর দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল ও আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আরএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের নগর ডিবি পুলিশের কার্যালয়েই রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানা থেকে এএসআই গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে আরএমপির ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় কারিমা খাতুন নামের এক পরীক্ষার্থী রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার তিন পুলিশ সদস্য ছাড়াও মেহেদী হাসান (৩৭) ও মকলেসুর রহমান আপন (৪৮) নামের আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। মকলেসুরের ঠিকানা অজ্ঞাত বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আর মেহেদী হাসানের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে। তারা পলাতক। এ মামলায় নাম না জানা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলা করা হয়। মামলার বাদী কারিমা খাতুনের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার জুমারপাড়া গ্রামে।
আরএমপির মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুই কনস্টেবল ও এক এএসআইকে শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরএমপির আদালত পরিদর্শক আবদুর রফিক জানান, রাতে আসামিদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে আসামিদের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডেরও আবেদন করা হয়নি।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com