সোহেল আহমেদ: অসুস্থতা নিয়ে বর্তমানে সিঙ্গাপুর চিকিৎসাধীন আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের। গত রোববার সকালে হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিয়াক বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে বিএসএমএমইউ’র থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেবকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে তার সুস্থতা কামনা করছি। সৃস্টিকর্তার নিকট দোয়া প্রার্থনা করছি,তিনি সহ সকল অসুস্থ রোগীরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। আমরা যারা সমাজে বসবাস করি অধিকাংশই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন করি/ দলের জন্য সক্রিয় কাজ করি। স্বাধীন বাংলাদেশে এটি সবার নাগরিক অধিকার। ফলে প্রত্যেকের মধ্যেই নিজস্ব দলের আদর্শ এবং ভিন্ন সত্ত্বা থাকবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। গণতান্ত্রিক ধারা এটাকেই বলে।
কিন্তুু জনাব ওবায়দুল কাদের অসুস্থতার পর একটা বিষয়ে অবাক হলাম! লক্ষ্য করলাম সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ ও আইডি থেকে তাকে নিয়ে ট্রল করা হচ্ছে। তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে যা ইচ্ছে তাই মন্তব্য করছে এক শ্রেনির মানুষ। একই রকম ট্রল করতে দেখা গেছে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের বিভিন্ন অসুস্থতার সময়ে। স্যোসাল মিডিয়ার এই ট্রল থেকে রেহাই পাননি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ দেশের বরেন্য আরো অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
রাজনৈতিকভাবে নানা ধরনের প্রতিহিংসামূলক নেতিবাচক কমেন্টস করা হচ্ছে। একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে বিষয়টি খুবই দু:খজনক এবং আমাকে অত্যন্ত মর্মাহত করছে। মানুষের বিপদ আপদ বলে কয়ে আসেনা। যেকোন মুহুর্তে আমি আপনি যে কেউ অসুস্থ হতে পারি। এটা সৃস্টিকর্তার ইচ্ছা। অসুস্থতা যেকোন মানুষের জন্য একটি কষ্টকর ব্যাপার। ভিন্ন রাজনিতীক বলে বিপদের সময়ে এরকম ট্রল নামক ঘৃণিত মনমানসিকতা কখনও কাম্য হতে পারেনা।
মানুষ হিসেবে আমাদের পরস্পরের প্রতি দয়া, মায়া, সম্মান এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা উচিত। যদি তা না হবে তবে পশু আর মানুষের আচার আচরণের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? বিদ্যা-বুদ্ধি-বিবেক সবসময় আমাদের জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলী অর্জনের পথ দেখায়। এসব চর্চায় মোটেও পিছিয়ে নেই দেশের মানুষ। তারপরেও কিছু মানুষরূপী অসামাজিক লোকেরা সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘৃণা,বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়িয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।
বিষয়গুলো দেশের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দেখভাল করা উচিত বলে মনেকরি। এছাড়াও যারা এসব করছে তাদের বিষয়টি মনে করিয়ে শুধরে দেয়া তাদের বন্ধু- বান্দব পরিচিত জনদের কর্তব্য বলে মনে করি। রাজনীতি / সামাজিক কাজ করতে গেলে তর্ক – বিতর্ক থাকবে। থাকবে মতপার্থক্য। এসব নিয়ে পরিচালিত হয় সমাজ। এবং সমাজ থেকে দেশ। আবার এর মধ্যেই লুকায়িত দেশাত্ববোধ। সবকিছুই তো দেশের জন্য। দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য।
তাই আর নয় কারো শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে অপ্রত্যাশিত ট্রল করা। আসুন প্রতিজ্ঞা করি, সবে মিলে কাজ করি। জাগ্রত করি ভালোবাসা দেশের প্রতি। সম্মান করি দেশের প্রতিটি কর্মমজজ্ঞতাকে। এটাই হোক আগামী দিনের প্রতিজ্ঞা।
সকলের সুস্বাস্থ্য কামনায়,,