রাইসির মৃত্যুতে পাল্টে যাবে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি!

লেখক:
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে এ মৃত্যু তেহরানের পররাষ্ট্রনীতি ও আচরণে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ দেশটিতে প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারলেও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে খোদ সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার কাছ থেকে। বাস্তবে ইরানের নীতিগত বিষয়কে নিয়ন্ত্রণ করেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয় কারও কাছেই।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট মূলত একজন বাস্তবায়নকারী তিনি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নন। দেশটির মূল সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসি ও আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে আঞ্চলিক সংঘাতকে কেন্দ্র করে তেহরানের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

ইউনাইটেড অ্যাগেইন্সট নিউক্লিয়ার ইরানের পলিসি ডিরেক্টর জেসন ব্রডস্কাই জানান, ইরানের প্রেসিডেন্ট কেবল একজন বাস্তবায়নকারী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নন। ফলে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের মৌলিক নীতিকে কোনো পরিবর্তনই আসবে না।

রিচম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরি গোল্ডবার্গ জানান, রাইসি শুধুমাত্র সর্বোচ্চ নেতার হয়ে কাজ করেন। কারণ তিনি দেশটির সবচেয়ে কম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন।

তবে হঠাৎ করেই প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে ইরানের ক্ষমতায় একটি শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে, যার ফায়দা নিতে লড়াইয়ে নামতে পারেন জ্যৈষ্ঠ রাজনীতিবিদরা। যদিও ইরানের সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারা অনুযায়ী বর্তমানে ক্ষমতায় আসবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। তার ক্ষমতা গ্রহণের ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বলা হচ্ছে ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে সিংহাসনের পৌঁছানোর জন্য ক্ষমতাবান নেতার কোনো অভাব নেই ইরানে। ফলে রাইসির এমন আকস্মিক মৃত্যু বরং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকেই একটি পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে। তাকে এখন প্রমাণ করতে হবে তিনি শুধু দেশকেই নয় বরং ইরানের নেতৃত্বকেও পরিচালনা করতে পারেন।

রাইসির মৃত্যুতে পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন না হলেও আঞ্চলিক সংঘাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের মনোযোগ অনেটাই সরিয়ে নিতে পারে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার জুইস ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটির প্রধান নির্বাহী মাইকেল মাকভস্কি জানান, ইরান এখন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা বেশি মনোনিবেশ করতে পারে, কারণ তাকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।