রবির সিদ্ধান্তে অবাক বিসিবি

:
: ৬ years ago

২৪ ঘণ্টা আগেই জানা, জাতীয় দলের টাইটেল স্পন্সরশিপ চুক্তি বাতিল করেছে দেশ প্রসিদ্ধ টেলিকম অপারেটর ‘রবি’। নির্ধারিত চুক্তির সময়সীমা পূরণের দশ মাস আগে রবির এই সরে দাঁড়ানো জন্ম দিয়েছে অনেক প্রশ্নের। হঠাৎ কি এমন হলো যে, রবি নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগেই চুক্তি বাতিল করলো? বিসিবি ঘটানাটিকে কিভাবে দেখছে?

বোর্ডের প্রধাননির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনের কথায় পরিষ্কার, তারা রবির এমন চুক্তি ভঙ্গের সিদ্ধান্তে রীতিমতো বিস্মিত, ‘আমাদের কাছে রবির সিদ্ধান্ত হতবাক করার মতো।’

একথা বলার পাশাপাশি বিসিবি প্রধান নির্বাহী জানিয়ে দিয়েছেন রবির চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিয়েছেন এবং এশিয়া কাপের আগে নতুন টিম স্পন্সর খোঁজার প্রক্রিয়া শুরুর কথাও জানান তিনি।

তার কথা, ‘হ্যাঁ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্পন্সরশিপ থেকে রবি তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিষয়টা আমরা গ্রহণ করে নিয়েছি এবং আমাদের সংশ্লিষ্ট যে বিভাগ তাদের জানিয়ে দিয়েছি।’

প্রশ্ন উঠলো হঠাৎ কি কারণে রবি সরে দাঁড়ালো? বিসিবি সিইও জবাবে অনেক কথার ভিড়ে একটি কথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তাহলো- ‘তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মোবাইল কোম্পানিগুলোর সাথে কোন কোন শীর্ষ তারকা ক্রিকেটারের চুক্তি তথা বিজ্ঞাপন করার ব্যাপারে চরম আপত্তি তুলেছে এবং মূলতঃ সে আপত্তি থেকেই বিসিবির সাথে চুক্তি ভাঙ্গা।’

রবির যুক্ত বিসিবির কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান সিইও। তিনি বলেন, ‘এদিকে রবি চুক্তি বাতিলের যে কারণ দাঁড় করিয়েছে, তা বোর্ডের কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনের কথায় পরিষ্কার, স্পন্সর মোবাইল কোম্পানি রবি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী যেমন গ্রামীণ ফোন, বাংলালিংক ও এয়ারটেল- মোবাইল কোম্পানির পণ্যকে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছিল। তাদের অভিযোগ ছিল, তারা মানে মোবাইল কোম্পানি জাতীয় দলের টিম স্পন্সর হলেও জাতীয় দলের একাধিক বা কয়েকজন ক্রিকেটার অন্য মোবাইল কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিজ্ঞাপন করেছে। যা তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের পরিপন্থি।’

বিসিবি সিইও আরও বলেন, ‘তাদের দাবি ছিল যেহেতু রবি টিম স্পন্সর, তাই জাতীয় দলের কোন ক্রিকেটার রবির বাইরে অন্য কোনো মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপন করতে পারবে না। কোন ধরনের চুক্তিও করা যাবে না। তারই প্রেক্ষিতে আপনারা জানেন যে, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একটা মোবাইল কোম্পানির চুক্তি ছিল, সেটা বাতিল করেছিল সাকিব। তামিম ইকবালও গ্রামীণফোনের সঙ্গে যে চুক্তি ছিল, তা বাতিল করেছেন। আমাদের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজার সঙ্গে গ্রামীণের চুক্তিও বাতিলও প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। মোদ্দা কথা , আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিলাম। সে কারণে আমাদের কাছে রবির সিদ্ধান্ত হতবাক করার মতো।’

এখন বোর্ড কি করবে? সিইওর সোজা-সাপটা জবাব, ‘অবশ্যই আমাদের নতুন স্পন্সর দেখতে হবে। হয়ত দু’একদিনের মধ্যেই একটা সার্কুলারে যাব। আমরা চেষ্টা করব, এশিয়া কাপের আগে স্পন্সর নিশ্চিত করার জন্য। চেষ্টা করছি এশিয়া কাপের আগেই নিতে। সে ক্ষেত্রে এশিয়া কাপও হতে পারে, লং টার্মের জন্যও হতে পারে।’

রবির আচরণ কি পেশাদার ছিল? বিসিবি প্রধান নির্বাহীর কুটনৈতিক জবাব, ‘আসলে আমার মনে হয়েছে, তারা কৌশলগত কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা যেটা বলেছে সেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এই মুহূর্তে। কারণ আমরা তো তাদের চাওয়া মতো স্টেপ নিচ্ছিলাম এবং তারাও অবগত আছেন বিষয়টা।’

বিসিবি কি এখন রবির কাছে কোন ক্ষতিপূরণ চাইবে? কিংবা পাওনা দাবি করবে? সিইও জানালেন, ‘এটা এখন টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনে যা লেখা আছে তার মধ্যে দিয়ে যাবে। আমাদের লিগ্যাল টিমকে দিয়েছি। তারা দেখবে। এর মধ্যে আমদের যদি কোন ক্লেইম থাকে তবে তা আমরা অবশ্যই রেইজ (উত্থাপন) করব।’