রডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সিমেন্টের মূল্যও। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজারের তথ্য অনুসারে, দুই মাসের ব্যবধানে প্রতি বস্তা সিমেন্টে মূল্য বেড়েছে ৯০-১০০ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্মাণকাজে রডের চেয়ে তুলনামূলক চাহিদা সিমেন্টের বেশি। বছরের এ সময়ে নিমার্ণকাজ বেশি হওয়ায় সিমেন্টের চাহিদা বাড়ে। ফলে সিমেন্টের মূল্যও বেড়েছে।
সিমেন্ট শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল- ক্লিংকারের মূল্য এখন ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া বেড়েছে ডলারের বিনিময় হারও। এ কারণে বেড়েছে সিমেন্টের মূল্য।
তবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্য এখন স্থিতিশীল। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বাড়াচ্ছেন উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা। ফলে আবাসনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের গতি কমে যেতে পারে।
এ বিষয়ে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) বলেছে, এভাবে রড-সিমেন্টের মূল্য বাড়া একেবারেই অযৌক্তিক।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের নেতারা বলেন, হঠাৎ করে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেক আবাসন ব্যবসায়ী নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ করে দিতে চাইছেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। দুর্ভোগে পড়বেন ক্রেতারা। বড় ক্ষতির মুখে পড়বে আবাসন খাত।
তারা বলেন, বর্তমানে সিমেন্টের ওপর কোনো ধরনের কর আরোপ করা হয়নি। তাহলে মূল্য বাড়লো কেন?
রাজধানীর মুগদা এলাকার সিমেন্ট ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বলেন, বর্তমানে বাড়তি মূল্যে সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে। মাস দুয়েক আগে হোলসিম ব্র্যান্ডের সিমেন্ট বিক্রি হতো ৩৯০-৪০০ টাকায়। এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৫১০-৫২০ টাকায়। বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের ৩৫৫-৬০০ টাকা ছিল, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৭০-৪৮০ টাকা। একই অবস্থা আনোয়ার ও সুপারক্রিট সিমেন্টেরও।
তিনি জানান, ব্যবসা চালানোর খরচ বেড়েছে। এজন্য বিক্রিটা স্বাভাবিক রাখা উচিত। কিন্তু রড-সিমেন্টর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুনীর উদ্দিন আহমেদ জানান, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বাড়াচ্ছেন, যার বড় অংশ উৎপাদক অর্থাৎ মিলমালিকরা। তারা গত দু-তিন মাসে যে হারে সিমেন্টের মূল্য বাড়িয়েছে, তা কোনোভাবেই স্বাভাবিক হতে পারে না। মিলমালিকরা সিন্ডিকেট করে মূল্য বাড়িয়েছেন। অতি মুনাফার আশায় মূল্য বাড়াচ্ছেন। ফলে নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের গতি কমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।