রঙিন ভালোবাসায় বসন্ত

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

‘বসন্তে বসন্তে তোমার কবিরে দাও ডাক…’। আজ শুক্রবার ফালগুনের প্রথম দিন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিনের সঙ্গে এবার একদিনে একাকার হয়ে গেছে ভালোবাসা দিবসও। আজ সবার রঙে রঙ মিশিয়ে রঙিন হবার দিনের গুরুত্ব অন্য বছরের চেয়ে একটু বেশি-ই। বসন্তের প্রথম দিন যেমন বসন্তকে আহ্বান জানাবো, সেই সঙ্গে প্রিয় মানুষকে জানাবো প্রাণঢালা ভালোবাসা। তাই এবারের ফালগুনের প্রথম দিনটি আমাদের একটু বেশি আলোড়িত করেছে। আমরা বলতে চাই, রঙিন ভালোবাসা নিয়ে বসন্ত এসেছে। সকলকে বসন্ত এবং ভালোবাসা দিবসে নিরন্তর শুভেচ্ছা।

নানা আয়োজনে প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত উৎসব এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ^ ভালোবাসা দিবস পৃথক পৃথক দিনে উদযাপিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক দিবসগুলোকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে সমন্বয় করার জন্য বাংলা ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করা হয়েছে। এই পরিবর্তন কেবল বাংলাদেশের জন্যই প্রযোজ্য। ফালগুন মাস গণণা করা হবে ২৯ দিনে। কেবল লিপইয়ারে ফালগুন মাস হবে ৩০ দিনে। কেন এটা হয়েছে সেটা নিয়ে পরে একদিন সবিস্তর লিখবো। আজকের আমাদের মূল আয়োজন বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসের মধ্যে থাকতে চাই।

আমরা মনে করি ভালোই হয়েছে। তবে অনেকে বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবস একত্রে উদযাপন করতে স্বচ্ছন্দবোধ করেন না। তাদের পক্ষে হয়তো যুক্তিও আছে। কিন্তু আমরা মনে করি, বসন্তের রঙ আর ভালোবাসার রঙের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ভালোবাসি না এমন মানুষ একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই ভালোবাসা দিবস আর বসন্ত উৎসব একে অন্যের পরিপুরক। বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস একই বিন্তে দুটি কুসুমের মতো। সেই দুই কুসুম যখন একত্রে আমাদের কাছে ধরা দিয়েছে, তাকে গ্রহণ না করার কোন কারণ নেই।

আজ ভালোবাসার টানে রঙিন হয়ে সবাই মিলিত হবে নগরের বিভিন্ন মোহনায়। প্রিয়জনকে ভালোবাসা জানাবো, বাসন্তি সাজে নিজেকে রাঙিয়ে তুলবো সবাই। বসন্ত ও ভালোবাসায় মন রাঙিয়ে দিতে নানা আয়োজন আছে নগরজুড়ে। বসন্তের প্রধান উৎসব নগরের জগদীশ সাস্বরত বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নানা আয়োজনে আহ্বান জানিয়েছে উদীচী ও বরিশাল নাটক। এর বাইরে শিল্পকলা একাডেমির ভিন্ন আয়োজন ছাড়ওার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হবে বসন্ত বন্দনা আর ভালোবাসার আয়োজন। আমরা আমাদের সব দুঃখ-কষ্ট, অভিমান অনুযোগ ভুলে মিলতে চাই এক মোহনায়।

আমরা চাই, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস আমাদের যেভাবে রঙিন করে দিয়েছে, সেই রঙিন সাজ যেন বছর জুড়ে থাকে। আমরা যেন রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলতে পারি, ‘ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগলো যে দোল, স্থলে জলে বনতলে লাগলো যে দোল…’। দখিনা বাসাত আজ সবার হৃদয় খোলার আহ্বান জানাবে। বসন্ত ও ভালোবাসার এই প্রাণঢালা আহ্বান যেন প্রতিটি মানুষের অন্তর ছুঁয়ে যায়।  মানুষের মনের হিংসা, দ্বেষ, ধর্ম, বর্ণের ভেদ ভুলে দিক বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস। এই আহ্বানে আমরা যেন একটি রঙিন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি সেই প্রত্যাশাও করছি।