দুই দলই বিগ বাজেটের। তারকায় ঠাসা। এক পাশে সাকিব। আরেকপাশে তামিম। এক পাশে সোহান, মাহেদী, হাসান মাহমুদ। আরেকপাশে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ, সৌম্য। বিদেশিতেও দুই দল টক্কর দেওয়ার মতো। কিন্তু দুই দলের প্রথম লড়াইটা হলো একপেশে। তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল বেশ হেসেখেলে হারিয়েছে সোহান-সাকিবদের রংপুর রাইডার্সকে। মিরপুর শের-ই-বাংলায় বরিশাল জিতেছে ৫ উইকেটে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে রংপুর ৯ উইকেটে ১৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে বরিশাল শেষ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
পাঁচ মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে তামিম কেমন পারফর্ম করেন সেটাই ছিল দেখার। হতাশ করেননি বরিশালের ওপেনার। প্রথম ওভারে দৃষ্টিনন্দন দুই ড্রাইভে দুটি চার হাঁকান। এরপর স্পিনার মাহেদীকে অন সাইডে পাঞ্চ করে যে চার হাঁকান তা মুগ্ধতা ছড়ায়। হাসান মাহমুদকে ব্যাকফুটে পাঞ্চ করে পেয়ে যান আরেকটি চার।
মোহাম্মদ নবীকে এগিয়ে এসে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতেও তামিম পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। থিতু হয়ে বেশ ভালো ব্যাটিং করছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। কিন্তু নবীর বলে টানা দ্বিতীয়বার এগিয়ে এসে ছক্কা উড়াতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন। ফেরার ম্যাচে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ৩৫ রান করে আস্থার প্রতিদান দেন ভালোভাবে।
সাকিব আল হাসান ব্যাটিংয়ে রান না পেলেও বোলিংয়ে পেয়েছেন উইকেট। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে ইব্রাহিম জাদরানকে সীমানায় তালুবন্দি করান। শেষ ওভারে ফিরে তার শিকার মুশফিকুর রহিম। ফেরার ম্যাচে সাকিব ১৬ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট।
তামিমের শুরুর দায়িত্বশীল ইনিংসের পর সৌম্য ও মিরাজ হাল ছাড়েন সহজে। সৌম্য ১ রানে হাসান মুরাদকে উড়াতে গিয়ে বৃত্তের ভেতরে নবীর হাতে ক্যাচ দেন। মিরাজ একই বোলারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ২০ রানে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। ১৪ রানে মিরাজ ক্যাচ দিয়ে একবার বেঁচেও গিয়েছিলেন।
শোয়েব মালিককে নিয়ে জয়ের বাকি কাজ শেষ করার পথে ছিলেন মুশফিক। কিন্তু জয়ের থেকে দলকে ২০ রান দূরে থাকতে সাকিবের বলে মুশফিক আউট হলে খেলায় কিছুটা নাটকীয়তা ছড়ায়। কিন্তু স্নায়ু স্থির রেখে বরিশাল শেষ পর্যন্ত জয়ে বন্দরে পৌঁছায়।
শোয়েব মালিক ১৭ ও মাহমুদউল্লাহ ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই ইনিংস খেলার পথে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শোয়েব স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান। এর আগে কেবল ক্রিস গেইল এই ফরম্যাটে ১৩ হাজারেরও বেশি রান করেছেন। শেষ দিকে নেমে হাসান মাহমুদ ও মাহেদীকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে মাহমুদউল্লাহ ফেরার ম্যাচ রাঙান।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে রংপুরের ব্যাটিং একদমই ভালো হয়নি। সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ৩৩ বলে ৩৪ রান করেন। এছাড়া শেষ দিকে ১৯ বলে ২৯ রান করেন মাহেদী হাসান। এছাড়া সোহান ২৩ ও নবী ১০ রান করেন। রংপুরের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই পারেননি দুই অঙ্ক ছুঁতে।
ইনিংসের প্রথম বলে ইমরানের ইয়র্কারে বোল্ড হন ব্রেন্ডন কিং। দ্বিতীয় ওভারে খালেদ জোড়া উইকেট নেন। প্রথম রনি তালুকদারকে সীমানায় তালুবন্দি করানোর পর সাকিবকে বোল্ড করেন ডানহাতি পেসার। অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে সাকিব বোল্ড হন। বল হাল্কা বাক খেয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত করে। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আজমতউল্লাহ ওমারজাই স্পিনার ওয়েলাগেকে ফিরতি ক্যাচ দেন ৬ রানে।
সেখানে থেকে সোহান ও শামীম জুটি বেঁধে পরিস্থিতি মোকাবেলা করলেও দুজনের কেউই ইনিংস লম্বা করতে না পারায় রংপুরের স্কোরবোর্ডও হাসেনি। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৩৪ রান পায় বিপিএলের ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
বল হাতে খালেদ বরিশালের সেরা। ৩১ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন ডানহাতি পেসার। এছাড়া ১৩ রানে মিরাজের শিকার ২ উইকেট।