যৌতুক আর পরকীয়ার কারণে আগৈলঝাড়ার গৃহবধূ ঢাকায় খুন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার গৃহবধূকে স্বামীর পরকীয়ায় বাঁধা ও যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় ঢাকায় হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের সৈয়দ জসিম উদ্দিন চুন্নুর মেয়ে সৈয়দা মারিয়া রিপা (১৯) ও বরিশাল কোতয়ালী থানার ভেদুরিয়া গ্রামের আব্দুল বারেক হাওলাদারের ছেলে ঢাকার রড-সিমেন্টের ব্যবসায়ী স্বামী আব্দুল হাই (৩২) এর সাথে গত ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।

বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারে সকলকে নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার হাসান নগর গ্রামের ভাড়া বাসায় থাকতো। স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না দেয়ায় ও পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় গত ৫ ডিসেম্বর বাসায় বসে শ্বাসরোধ করে স্ত্রী সৈয়দা মারিয়া রিপাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রিপার পরিবারের। রিপার লাশ ঢাকা মেডিকেলে ফেলে দেবর রেজাউল ও ননদ মাহমুদা পালিয়ে গেছে। রিপার লাশ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। রিপার লাশ বৃহস্পতিবার তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ার দক্ষিণ শিহিপাশায় নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে

সূত্রে আরও জানা গেছে, বিয়ের সময় রিপার পরিবার এক লক্ষ টাকার আসবাবপত্র দেয়। পরবর্তিতে যৌতুক বাবদ পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে রিপার পরিবারের কাছে। রিপার পরিবার গরীব হওয়ায় স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে পারবে না বলায় স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। স্বামী আব্দুল হাই গত ৮/৯ মাস আগে প্রবাসীর এক স্ত্রীর (২৮) এর সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ২৪ নভেম্বর স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দিলে রিপাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয়। রিপা ২৫ নভেম্বর কামরাঙ্গীরচর থানায় স্বামী আব্দুল হাই, শ্বশুর আব্দুল বারেক ও শাশুড়ী মোর্শেদা বেগমের নামে জিডি করে। যার নং- ১১০৭।

থানায় অভিযোগের কারণে রিপাকে পুনরায় স্বামী ও পরিবারের লোকজন মারধর করেন। পরবর্তীতে রিপা আবার ২৭ নভেম্বর কামরাঙ্গীরচর থানায় স্বামী আব্দুল হাই, শ্বশুর আব্দুল বারেক ও শাশুড়ী মোর্শেদা বেগম রানী, ভাই রেজাউল, পরকীয়া প্রেমিকা শাহিদা বেগমের নামে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ স্বামী আব্দুল হাইকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং রাতে দুই পরিবারের সম্মতিতে স্বামী আব্দুল হাই যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও পরকীয়া প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক রাখবে না বলে শর্ত দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন বেড়েই চলছিল রিপার উপর।

রিপার বড়বোন সৈয়দা মার্জিয়া ও মামা পলাশ মোল্লা জানান, গত ৫ ডিসেম্বর পূর্বপরিকল্পিতভাবে রিপার স্বামী, তার পরিবারের লোকজন ও পরকীয়া প্রেমিকা শাহিদা রিপাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। পরে রিপার দেবর ও ননদ রিপাকে ঢাকা মেডিকেলে আনলে কত্যর্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। রিপার মৃত্যুর খবর পেয়ে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে। কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শাহিন ফকির জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। সে মোতাবেক আসামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।