বর্তমানে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি খুব ভালো, তাই অনেক বিদেশি উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তাছাড়া সুদহার কমানো হয়েছে, তাই দেশীয় বিনিয়োগও বাড়ছে। এর মধ্য দিয়েই আগামী অর্থবছরে সরকার বিনিয়োগ বাড়ানোর আশা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শুক্রবার (১২ জুন) নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আরও যুক্ত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালকুদার প্রমুখ।
চলতি অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ শতাংশ, সেখানে নতুন বছরের বাজেটে এই বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ ধরা হয়েছে। হঠাৎ এত বিনিয়োগ বাড়বে কীভাবে— এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিনিযোগ বাড়বে এ কারণে যে, বিদেশি অনেক উদ্যোক্তা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তুত। আর আমরা ১০০টির বেশি অর্থনৈতিক জোন করছি। এর মধ্যে ১৭টির কাজ শেষের দিকে। করোনার কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ স্থানান্তরিত হবে।
‘বিদেশিরা কেন আমাদের দেশে বিনিয়োগ করবে? কারণ তাদের বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের ইনসেনটিভ (প্রণোদনা) দেয়া হচ্ছে। আমরা এবারের বাজেটে লোকাল ইন্ডাস্ট্রিকে প্রাধান্য দিচ্ছি। লোকাল ইন্ডাস্ট্রি মানে শুধু বাংলাদেশিদের ইন্ডাস্ট্রি না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিদেশিদের ইন্ডাস্ট্রিকেও স্থানীয় হিসেবেই স্বীকৃতি দেয়া হবে।’
মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের দরকার হচ্ছে এই মুহূর্তে দেশের মানুষকে বাঁচানো, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া। বিদেশে হোক বা এ দেশেই হোক, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আশা করি আগামীতে ১০০টি ইকোনমিক জোনের মাধ্যমে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এখানে অটোম্যাটিকলি বিনিয়োগ আসবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, কোন পথে বিনিয়োগ আসবে সেগুলো এতদিন জানতাম না, এখন জানি। এ জন্য আইনগুলো সহজ করে দিচ্ছি। স্থানীয় ও বিদেশি সবাই একই পণ্য উৎপাদন করতে পারবে। দুইক্ষেত্রে একই ধরনের বেনিফিট দেয়া হবে।
‘এছাড়া ব্যাংক ঋণে সুদহার কমিয়ে ৯ শতাংশ করে দেয়া হয়েছে। ৯ শতাংশ এর বেশি সুদহার হলে খেলাপি ঋণ বাড়ে। মানুষ দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে বিনিয়োগ করে। কিন্তু এখন আর সেটা হবে না। কারণ আমরা সুদহারকে ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।’
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে রাজস্ব জিডিপির অনুপাত ১০ থেকে ১১ ভাগ। বিদেশে ১৬-১৬ ভাগের নিচে নেই ১৭-১৮ ভাগ পর্যন্ত আছে। রজস্ব জিডিপির অনুপাতটা যদি আমরা ১৫ ভাগেও উন্নীত করতে পারি, তাহলে আমাদের হাতে অনেক টাকা আসবে। এটাই হচ্ছে আমাদের বিনিয়োগের একটা অবলম্বন।
শেয়ারবাজারের জন্য বাজেটে নতুন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশের সরকারই পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে হস্তক্ষেপ করে না। দেশের অর্থনীতি যত শক্তিশালী হবে, তার প্রভাব দেশের পুঁজিবাজারে পড়বে। আমরা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে চাই। এটা করতে পারলেই পুঁজিবাজারে এর প্রভাব পড়তে বাধ্য।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে স্থবির দেশের অর্থনীতি। এ পরিস্থিতিতে টিকে থাকা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা সামনে রেখে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেই বাজেটের নানা দিক নিয়ে কথা বলতেই আয়োজন করা হলো এ ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com