গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর জীবনশঙ্কায় হাজার হাজার আফগান স্বদেশ ত্যাগ করেন। এদের কিছু মানুষ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সাময়িক আশ্রয় পেয়েছেন। তাদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু দেশত্যাগের পর ছয় মাস পার হতে চললেও এখনো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছেন অনেকে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা আফগান শরণার্থীরা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দুই বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দেশত্যাগের এতদিন পরেও তাদের আমিরাতের কঠোর নিয়ন্ত্রিত স্থাপনায় অনেকটা বন্দি জীবনযাপন করতে হচ্ছে। কবে নাগাদ পুনর্বাসন হবে তা নিয়ে কিছুই জানানো হচ্ছে না।
এক বিক্ষোভকারী অভিযোগ করে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অনেকটা জেলখানার মতো। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর আমিরাতি কর্তৃপক্ষ কয়েকজনকে আটকও করেছে।
জানা গেছে, গত বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ শুরুর পর বৃহস্পতিবারও তা চলমান ছিল। রয়টার্সের হাতে আসা ভিডিওতে বেশ কয়েকজন নারী, পুরুষ ও শিশুকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের অনুরোধ জানিয়ে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। একই ধরনের আরও কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।
বিক্ষোভ শুরুর পর বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা আমিরাতের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। তবে পুনর্বাসনের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ তিনি জানাতে পারেননি। তাছাড়া, শরণার্থীদের সবাই যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন তারও কোনো গ্যারান্টি নেই।
আফগানদের দেশত্যাগে সহায়তা করা আহমদ মোহিবি নামে এক সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ শরণার্থীদের অনেকে অনশনের হুমকি দিচ্ছেন। এদের একটি অংশ আবার আফগানিস্তানে ফিরে যেতে চান।
তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে আবুধাবির মার্কিন দূতাবাস ও আমিরাত সরকারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আমিরাতে ঠিক কতজন আফগান শরণার্থী রয়েছেন তা নিশ্চিত নয়। সবশেষ গত সেপ্টেম্বরে দেশটি নয় হাজার আফগানকে সাময়িক আশ্রয় দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। তবে বিক্ষোভকারীদের ধারণা, আবুধাবির দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে ১২ হাজারের বেশি আফগান রয়েছেন।