বিশ্বব্যাপী এখন এক আতঙ্কের নাম নভেল করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মূলত চীনে হলেও এখন সারাবিশ্বেই তা ছড়িয়ে পড়ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এখন চীনের প্রায় সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস।
এদিকে, হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান শহরে মৃতের সংখ্যা ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।
এ পর্যন্ত চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে পাঁচজনের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। যদিও এই মহামারী নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই সেখানে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আমেরিকাজুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি। এক মৌসুমেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮ হাজারের বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় এলার্জিক ও সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের তথ্যা অনুযায়, গত এক দশকের মধ্যে ২০১৯-২০২০ সালের ফ্লু মৌসুম সবচেয়ে ভয়াবহ।
এই মৌসুমে ফ্লু সংক্রান্ত জটিলতায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কমপক্ষে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনিভার্সিটির লুইস কাৎজ স্কুল অব মেডিসিনের ফ্যামিলি অ্যান্ড কমিউনিটি মেডিসিনের প্রধান ড. মার্গোট সোভয় বলেছেন, ফ্লু আমেরিকানদের জীবনে একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে দিন দিন এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা। ইউনিভার্সি অব মিনেসোটা মেডিকেল স্কুলের চিকিৎসক নাথান কোমিলো বলেন, লোকজনের এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত। ফ্লুর ক্ষেত্রে কিছু ঘটনা সাধারণ নয়। অনেক সময় এটা ভয়াবহ হতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে একটি আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে ভাইরাসগুলোতে প্রতি বছর পরিবর্তন আসছে। যার ফলে ভাইরাস শনাক্ত ও এর চিকিৎসায়ও পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।