বি. চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাঁদের খুবই ইতিবাচক বলে মনে হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তাঁরা অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক কথা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনে করছে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে আসবে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে সংলাপ শেষে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে যুক্তফ্রন্ট দাবি হিসেবে এনেছে, তা আমরা মেনে নিয়েছি। সব দাবি তো আর মানা যাবে না। এখানে সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে কিছু দাবি জড়িত। তবে তাঁদের ধন্যবাদ দিতে হবে যে, সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে হবে, এমন কোনো মেজর দাবি তাঁরা করেননি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তাঁদের আলোচনা থেকে এই সুরই স্পষ্ট হয়েছে যে, তাঁরা সরকার পরিবর্তন কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জোর কোনো দাবি উত্থাপন করেননি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, তারা হ্যাপি (খুশি)।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, সংলাপ সৌহার্দ্যপূর্ণ, গঠনমূলক, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য শুনেছেন। এখানে উভয় পক্ষ মিউচুয়াল হলো, উভয়ই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এক সুর। তাঁদের একজন ছাড়া ২০ জনই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের দেওয়া দাবির অনেকগুলোই মেনে নিয়েছেন। যেমন, নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা বলেছে সংসদ হয় ভেঙে দিতে হবে, না হয় নিষ্ক্রিয় করতে হবে। আমাদের নেত্রী পরিষ্কারভাবে বলেছেন, সংসদের শেষ সেশন হয়ে গেছে, তাই এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। নির্বাচনের যখন শিডিউল ঘোষণা হবে, আমাদের সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।
যুক্তফ্রন্টের দাবির বিষয়ে কাদের বলেন, তাঁদের দ্বিতীয় দফা দাবি পুরোটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তৃতীয় দফা দাবির আংশিক মেনে নেওয়া হয়েছে। তা হলো নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ ক্ষমতা সীমিত করার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সীমিত অলরেডি হয়ে গেছে।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেনাবাহিনী নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দিয়ে প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দেশেও সংকটে, দুর্যোগে তাদের অবদান অসামান্য। এই সেনাবাহিনীকে যত্রতত্র ব্যবহার না করাই ভালো। সেনাবাহিনী অবশ্যই নিয়োজিত হবে, তবে তা হলো তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না, যুক্তফ্রন্টের এমন দাবির প্রসঙ্গে কাদের বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তা সংসদে পাস হয়নি। এটা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেছেন। এখন নির্বাচন কমিশন এই সময়ের মধ্যে কতটা ইভিএম ব্যবহারে ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটা একবারে পরিষ্কার নয়। হয়তো সীমিত আকারে ব্যবহারের চিন্তাভাবনা নির্বাচন কমিশনের থাকতে পারে। তারপরও যুক্তফ্রন্ট নেতাদের বিশেষ অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী এটা নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। সে জন্য আমরা এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার ঠিক হবে না বলে মনে করি।