যথাসময়ে নির্বাচন: প্রধানমন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

সহিংসতা করে নির্বাচন থামানো যাবে না, জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যথাসময়েই নির্বাচন হবে।

 

আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, যেমন আচরণ, তার জন্য ওই রকমই শিক্ষা দিতে হবে।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলজিয়ামের রাজধানীতে ব্রাসেলসে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট যে আসলে সন্ত্রাসী এবং বিএনপি যে একটা সন্ত্রাসী দল, এটা তারা আবার প্রমাণ করল। কানাডার কোর্ট কিন্তু এই বিষয়টা কয়েকবার বলেছে। এখানে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কানাডায় আশ্রয় চেয়েছিল, তারা সেখানে কিন্তু আশ্রয় পায়নি, সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যা পেয়েছে।

‘এদের মধ্যে কোনো মনুষত্ববোধ নেই। এদের সাথে আমরা যতই ভালো ব্যবহার করি না কেন, এদের কখনোই স্বভাব বদলাবে না। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে এরা বিশ্বাস করে। কারণ, অবৈধভাবে অস্ত্র হাতে ক্ষমতা দখলকারীর হাতেই তাদের জন্ম। এটাই তারা ভালো বোঝে।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমার যেটা ধারণা—এরা তো নির্বাচন চায় না, এরা একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাস যদি আপনারা দেখেন, ২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে আজকে ২০২৩ সাল, এই বাংলাদেশ তো বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। অস্বীকার করতে পারবেন না। আজকে আপনাদের কাছে কেউ ভিক্ষা চাইতে আসবে না। প্রত্যেকের খাবারের ব্যবস্থা, ভূমিহীনদের ভূমির ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ কাজ করলেই কিন্তু খেতে পায়, অন্তত সেই ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।

‘নানাভাবে মানুষকে কষ্ট দেওয়াটাই তাদের (বিএনপি) চরিত্র। এখানে আমার বলার কিছু নেই। আন্তর্জাতিকভাবে সবাই আমাদের প্রশংসা করে, একমাত্র দুঃখে মরে যায় এই বিএনপি আর জামায়াত জোট। বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে, সেই শিক্ষাটাই এখন আমাদের দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সেটাই আমরা দেবো। কারণ, এদের জন্য এই দেশটা ধ্বংস হোক, এটা সহ্য করা যাবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে তারা এখানে-ওখানে চোরা পথে গাড়ি পোড়াচ্ছে। যারা গাড়ি পোড়াচ্ছে, তাদেরকে চিহ্নত করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। যে হাত দিয়ে গাড়ি পোড়াবে, আমার তো মনে হয়, যার গাড়ি যেখানে পোড়াবে, এই গাড়ি পোড়ানো হাত সঙ্গে সঙ্গে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। তাহলেই তাদের শিক্ষা হবে, তাছাড়া শিক্ষা হবে না। তাদের শিক্ষাটা ওইভাবেই করতে হবে।’

 

সহিংসতার কারণে বিএনপি থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝখানে তারা কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছিল। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা কিন্তু দেওয়া হয় নি। একটাই শর্ত ছিল—তারা কোনো ধরনের অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করবে না। তারা যখন সুস্থভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল, তাতে কিন্তু তাদের প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করা শুরু করেছিল। ২৮ তারিখ বিএনপি যেসব ঘটনা ঘটালো, বিশেষ করে পুলিশকে হত্যা করেছে, মাটিতে ফেলে যেভাবে কোপালো, সাংবাদিককে ধরে পিটানো, মারা, এ ধরনের ঘটনার পরে জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির আর কিছুই জুটবে না। শুধু তাই না, পুলিশকে তো মেরেছেই তার পরে আবার হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে। সেখানে আবার পুলিশের ওপর আক্রমণ।’

‘আজকে আপনারা দেখেন, ইসরায়েল প্যালেস্টাইনে যেভাবে হামলা করেছে, সেখানে হাসপাতালে তারা বোমা হামলা করে নারী-শিশুদের হত্যা করেছে, সেখানে তাদের সবকিছু বন্ধ করে রেখেছে। আমি তো তফাৎ কিছু দেখতে পাচ্ছি না। নিন্দা জানাই। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নিজেরাই আবার পালালো। পালিয়ে গিয়ে আবার অবরোধের ডাক। কিসের অবরোধ, আর কার জন্য অবরোধ। যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রসংশা করছে, তখন তাদের কাজটাই হলো—বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা, বাংলাদেশে এমন অবস্থা তৈরি করা যে, বাংলাদেশে কিছুই হয়নি।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই উপমহাদেশে নদীর তল দিয়ে এত বড় টানেল আর কোনো দেশ কিন্তু এ পর্যন্ত করেনি। আমরা প্রথম করলাম। এই টানেলটা যখন আমরা উদ্বোধন করছি, তখন এখানে তারা মানুষের ওপর হামলা করছে, পুলিশের ওপর হামলা করছে, মানুষ খুন করছে।’

সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিকদের ওপরে যেভাবে তারা চড়াও হলো, কেন তাদের ওপর হঠাৎ হামলা? কারণ, সাংবাদিকরা তো তাদের খুব ভালো ভালো নিউজ দিচ্ছিল। টকশোতেও ভালো ভালো কথা আর সরকারের দোষটাই বেশি দেখে। তাহলে সাংবাদিকদের ওপর এত রাগটা কেন? সেটা আমি বুঝতে পারলাম না।