ফুটবলের মহানায়ক দিয়েগো ম্যারাডোনার প্রস্থান কেবল তার আত্মীয়-স্বজন কিংবা কাছের মানুষদেরই নয়, বরং পুরো বিশ্বকেই কাঁদিয়েছে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম ফুটবলার রেখে গেছেন কোটি ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষি। রেখে গেছেন বর্ণাঢ্য একটা অধ্যায়।
ম্যারাডোনা নামের যে ভার, সেটি বহন করা মুশকিল। বিশাল পরিবার রেখে যাওয়ায় তার উত্তরাধিকারী কে হবেন, সেটিও বলা মুশকিল। ম্যারাডোনা তার উত্তরসূরী নির্বাচন করে গেছেন কিনা, সেটিও এখন পর্যন্ত জানা যায় নি। তবে ব্যক্তিগত জীবনে অনেকেরই সান্নিধ্য পেয়েছেন দিয়েগো। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজন তাকে জুগিয়েছে প্রেরণা। সে হিসেবে কারা হতে পারেন তার উত্তরাধিকারী, সেটি জানার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ক্লদিয়া ভিয়াফেইন
ম্যারাডোনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন তিনি। দিয়েগোর বয়স যখন ১৬, তখন থেকেই ক্লদিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তার। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন তার স্ত্রী। ক্লদিয়া হচ্ছেন ম্যারাডোনার উত্থান-পতনের সাক্ষী, যিনি তাকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেছেন, ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হতে দেখেছেন, ফুটবল ছাড়তে দেখেছেন। তবে দু’জনের সম্পর্কটা বেশ বাজেভাবেই শেষ হয়।
ডালমা ও জিয়ানিনা
ম্যারাডোনা-ক্লদিয়া জুটির দুই সন্তান। মা-বাবার সম্পর্কের বাজে পরিণতির ছাপ পড়ে তাদের জীবনেও। তবে ম্যারাডোনা তার এই দুই সন্তানকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন।
ম্যারাডোনার অন্য সন্তানরা
ডালমা ও জিয়ানিনা ছাড়াও, আরো ৩ সন্তানের জনক দিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৯৬ সালে ভ্যালেরিয়া সাবালাইনের গর্ভে জন্ম নেয়া হানা একজন। ক্রিস্টিনা সিনাগ্রার গর্ভে জন্ম নেয়া দিয়েগো জুনিয়র তার ২য় সন্তান। আরেকজন হলেন দিয়েগো ফার্নান্দো। তার মায়ের নাম ভেরোনিকা ওজেদা। এই তিন সন্তানের মায়েদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক ছিল না ম্যারাডোনার।
ম্যারাডোনার অন্য বান্ধবীরা
শেষ সন্তানের মা ভেরোনিকা ওজেদার সঙ্গে অল্প কিছুদিনের জন্য সম্পর্ক ছিল ম্যারাডোনার। এর আগে রোচিও ওলিভা নামে তার আরেকজন বান্ধবী ছিল। ওলিভার সঙ্গে দুবাই, বুয়েন্স আয়ার্স ও মেক্সিকোতে বেশ সুসময় কাটিয়েছেন ম্যারাডোনা। তবে এই জুটির কোলে কোনো সন্তান আসে নি।
মাতিয়াস মোরলা
তিনি ছিলেন ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত সহকারী। মৃত্যুর পর মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তবে দিয়েগো তাকে প্রচণ্ড বিশ্বাস করতেন এবং তিনি ছিলেন ম্যারাডোনার শেষ সময়ের অন্যতম সাক্ষী।
লিওপোলদো লুকু
ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক। অপারেশন রুমে থাকলেও, শেষমুহূর্তে লুকু তাকে অপারেট করতে পারেননি। ম্যারাডোনার সবশেষ জীবন্ত ছবিটা পোস্ট করেছেন তিনি এবং বেশ বিতর্কিতও হয়েছেন।
ম্যাক্সি
ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত সহকারী মোরলার সৎ ভাই ছিলেন তিনি। বেশ দুঃসম্পর্কের মনে হলেও, ম্যারাডোনার বেশ কাছেই ছিলেন তিনি। বিশেষ করে দিয়েগোর দুঃসময়ে সার্বক্ষণিক তার পাশে ছিলেন ম্যাক্সি। এমনকি মৃত্যুর দিনও ঘরে ছিলেন ম্যাক্সি।
জোনাথন এসপোসিতো
দিয়েগোর ভাগ্নে। জনি ছিলেন শেষ ব্যক্তি যিনি মঙ্গলবার রাতে ম্যারাডোনাকে জীবন্ত দেখেছিলেন।
পরিবারের অন্যান্যরা
ম্যারাডোনা ছিলেন ৮ ভাই-বোনের মধ্যে ৫ম। পরিবারের অন্য সদস্যরা তার তারকাখ্যাতি উপভোগ করতেন না। বরং সাধারণ দিয়েগোই তাদের পছন্দের ছিল। যার ফলে বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর তাদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বই তৈরি হয় ম্যারাডোনার।