মে মাসজুড়েই হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ও অতিবৃষ্টি

:
: ৬ years ago

বৈশাখ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু এখনও তাপপ্রবাহ শুরু হয়নি বলে গরমের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাচ্ছে মানুষ। মার্চের পর এপ্রিলেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রা তাই এখনও আরামদায়ক। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মে মাসে তেমনটি হবে না। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহের শঙ্কা রয়েছে। এতে পারদ চড়বে। আছে অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কাও। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া ভবনে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় গৃহীত মে মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ। এপ্রিল মাসের আবহাওয়াও বিশ্নেষণ করা হয় সভায়।  গত মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় ৩৬ দশমিক সাত শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে সারাদেশে। রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের তুলনায় ১০৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য ছয় বিভাগেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। শুধু বরিশালে গড় বৃষ্টির তুলনায় কম বৃষ্টি হয়েছে। এপ্রিল মাসে ঢাকায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫০ মিলিমিটার। এপ্রিলে বৃষ্টি হয়েছে ২৩৬ মিলিমিটার।

চলতি মাসেও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এ মাসে ঢাকায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৮০ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাত হতে পারে ৩৪৫ মিলিমিটার পর্যন্ত। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ১৮ দিন হলেও তা এ মাসে ২০ দিন হতে পারে ঢাকায়। দেশের অন্যত্রও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দিন বৃষ্টি হতে পারে মে মাসে।
বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস মে। ২০১৭ সালের মে মাসে টানা ১৯ দিনের তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়েছিল সারাদেশ। ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। রাজশাহীতে তাপমাত্রার পারদ ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে ছিল। এবারও তেমন তাপপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে। রাজশাহী, রংপুর বিভাগ এবং যশোর অঞ্চলে একটি তাপপ্রবাহে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। ঢাকা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে একটি থেকে দু’টি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইতে পারে। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। গত মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সামছুদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, এপ্রিল ও মে মাসে বাংলাদেশে গরম পড়ে। কিন্তু এপ্রিলে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হওয়ায় সেটি হয়নি। তাপপ্রবাহ উত্তর ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি। এই তাপপ্রবাহ চলতি মাসের মধ্যভাগে বাংলাদেশে আসতে পারে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এখন তীব্র গরমের আশঙ্কা রয়েছে।

চলতি মাসে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে সিলেট বিভাগে। পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মে মাসের প্রথমার্ধে স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদি আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। দেশের অন্যান্য এলাকার নদনদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকবে।
পূর্বাভাসে আভাস দেওয়া হয়েছে, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত দুই থেকে তিনটি মাঝারি অথবা তীব্র বজ্রঝড় (কালবৈশাখী) এবং দেশের অন্যত্র তিন থেকে চার দিন হালকা অথবা মাঝারি বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।