মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর উদ্দোগে ডিজিটাল গতিতে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে বিসিসি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

এম.এস.আই লিমন : বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে ডিজিটালাইজেশন করতে মেয়র সেরেনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর উদ্যোগে ইতোমধ্যে নানান কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে। রাস্তাঘাট,খাল পুনুঃউদ্ধার,জলাবদ্ধতা দুরিকরন,ড্রেনেজ ব্যবস্থার সম্প্রোসারন ও উন্নতকরন, বর্জ্য ব্যবস্থা তরান্বিত করন,সিটি কর্পোরেশনের আভ্যন্তরিন দুর্নীতি, অনিয়ম দুর করা, কাজের সুবিধার্থে পদ বন্টন, স্থায়ীদের সময়মত বেতন পরিশোধ এবং অস্থায়ীদের মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ইতিমধ্যে কিছু কাজের সুফল কর্পোরেশনে বসবাসকারী নাগরিকগন পেতে শুরু করেছে। যে সকল কর্মর্সূচি ডিজিটালাইজেশন মাধ্যমে সম্পন্ন করার উদ্দোগ গ্রহন করা হচ্ছে,সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অতি শীঘ্রই সিটিতে বসবাসকারি নাগরিকরা উন্নত বিশ্বের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে জানান বিসিসির সংশ্লিষ্ট কর্তব্যাক্তিরা।

অনুসন্ধানে এবং সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে,ক্ষমতা গ্রহনের পরেই নতুন মেয়র ১শ’ দিনের একটি কর্মসূচি হাতে নেন। ওই কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য তিনি আভ্যন্তরিন কিছু দপ্তরের পরিবর্তন আনেন।বিসিসির কর্মকর্তা কর্মচারিদের মধ্যে শৃংখলা ফিরিয়ে আনয়নের লক্ষে ১৩ জন কর্মকর্তা কর্মচারীদের পূর্বে জড়িত থাকা দুর্নীতির খসরা পর্যালোচনা করে তাদেরকে দ্বায়ীত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রশাসনিক শাখায় ন্যাস্ত করা হয়েছে। আরও বেশ কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা,কর্মচারিদের দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আসন্ন তালিকায় বিসিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের চাকুরি বিধিমালা বাংলাদেশ গ্যাজেট উপেক্ষা করে২০১৫ সালের মে মাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা খান মোঃ নুরুল ইসলাম ´তার অপব্যবহার করে টেস্কটাইল ইঞ্জিনিয়ারকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার – উপ- সহকারি প্রকৌশলী পদে মোঃ হানিফ হোসেনকে চলতি দ্বায়ীত্ব প্রদান করে যা ছিল সম্পুর্ন বিধি বর্হিভূত।একই পদের আরও সিনিয়র বিষয় ভিত্তিক কর্মকর্তা থাকা সত্বেও বিগত মেয়র বিএনপি ঘড়ানার ছিল বিধায় আ’লীগ সমর্থীত এক কর্মচারি জিনি তার বিষয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরেও কোন পদোন্নতি পাননি। যা সরকারি বিধির চরম লঙ্ঘন । এর রকম বিভিন্ন অসামঞ্জস্ব্যতার কারনে অনেক কর্মকর্তা নাখোস হলেও জনসার্থে মেয়র অনড় থাকেন ।

যাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা দীপকলাল মৃধা, বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান,ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট আজিজুর রহমান শাহিন, সহকারি হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মইন উদ্দিন,পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক মাহাবুব তালুকদার, সহকারি পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ আলি, মাহাবুব আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসমা আক্তার রুমি, হাট-বাজার শাখার সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ নুরুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারি জাহাঙ্গির হোসেন,পানি সরবরাহ শাখার উচ্চমান সহকারি আবু বকর সিদ্দিক, আরাফাত হোসেন মনির, ড্রাইভার শংকর চন্দ্র বনিককে তাদের নিজ নিজ দ্বায়িত্ব থেকে সাময়ীকভাবে অব্যাহতি প্রদান সকলকে প্রশাসনিক শাখায় ন্যাস্ত করা হয়েছে। ফলে এরই মধ্যে বিসিসির প্রতিটি শাখা অনেকটাই দতুর্নীতিমুক্ত হয়েছে।

এখন আর পূর্বের মত যেকোন কাজ নিয়ে সিটি কর্পোরেশনে গেলে কোন গ্রাহক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেনা। এক সময় এমন অবস্থা দাড়িয়েছিল যে, প্রতিটা শাখায় উৎকোচ না দিয়ে কোন কাজ সম্পন্ন করতে পারতোনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারি জানায়, বিগত ২৫ বছরের মধ্যে কেবল বর্তমানেই বিসিসির সকল কাজ নিয়মাফিক পরিচালিত হচ্ছে। তাতে করে কাজগুলো সম্পন্ন হচ্ছে দ্রুত গতিতে, পাশাপাসি কর্মকর্তা কর্মচারিরাও অনেক সাচ্ছন্দবোধ করছে।

তারা কোন ঝামেলা ছাড়াই নির্বিঘ্নে কাজ চালাচ্ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে ইতোমধ্যে নগরীর গুরুত্বপুর্ন সড়কসহ অশে পাসের মোট পচিশটি সড়ক মেরামত করে চলাচলের যোগ্য করে তোলা হয়েছে। ভোরে আলো ফোটার পূবেই পরিচ্ছন্ন কর্মীরা যার যার কাজ শেষ করে, ফলে সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠে নগরবাসি সাচ্ছন্দে রাস্তায় চলাচল করতে পারছেন। বাকি সড়কগুলোকে পর্যায়ক্রমে সংস্কার করার কাজ খুব শীঘ্যই শুরু হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

নগরীর মোট ৩৬ টি খালের মধ্যে প্রভাবশালীরা ২২ টি খালের জমি দখলে নিয়ে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। ইতোমধ্যে রুপাতলী খাল যা দলীয় প্রভাবশালী নেতারাই দখল করে রেখেছিল ওই খালটি পুনঃ উদ্ধার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোর পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখার জন্য অভিযান চলছে বলে নির্ভযোগ্য সুত্র জানায়। এরই সাথে নগরীতে জলাবদ্ধতা দুরিকরনের ড্রেনগুলোতে ছয়ফুট অন্তর অন্তর পকেট কেটে ময়লা অপসারনের ব্যবসা করছেন। তবে, নির্বাচনের পূর্বে দেয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সব ড্রেনগুলোর ময়লা অপসারন এবং সংস্কার করা হলেও ২৪ নং ওয়ার্ডে এ ওয়াহেদ সড়কের ড্রেনটি কোন অজ্ঞাত কারনে পরিস্কার করা হচ্ছেনা। এখানে শেরইবাংলা সড়ক ,আক্কেল আলি সড়ক এবং হামিদখান সড়কের সব পানি কেবল এ ওয়াহেদ সড়কের একটি মাত্র ড্রেন দিয়ে অপসারিত হত, তাও প্রায় ৪ বছর যাবত সম্পুর্নরুপে ভরাট হয়ে থাকলেও কোন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ওই ড্রেনটি পরিস্কার করছেনা।

এমনটি ড্রেনটি তৈরীর সময় কোন খাল বা নদী না থাকায় ময়লা অপসারিত হচ্ছেনা। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, বর্ষা ঋৃতুতেতো বটেই শুস্ক মৌসুমেও অনেকের বাসা বাড়িতে পানিতে তলিয়ে থাকে ।যেটুকো ড্রেন করা হয়েছিল সেটির শেষ মাথা না থাকার কারনে পানি ও ময়লা বের হবার জায়গা সম্পুর্ন ভরাট হয়ে আছে। এর মধ্যে অনেকেই আবার ড্রেনের উপরে নিজ বাড়ির প্রবেশ গেট তৈরী করেছে, কেউ আবার ড্রেনের মধ্যপ মাটি ফেলে পাকা স্থাপনা তৈরী করেছে।

সাবেক কাউন্সিলরকে বহুবার এ বিষয়ে অবহিত করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।ফলে প্রায় কয়েক লাখ লোকের এই ওয়ার্ড এবং নগরীর সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হয়ে আছে। এ বিষয়ে বিসিসি’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান এর সাথে যোযোগ করা হলে তিনি খুব শীঘ্রই সকল ড্রেন সংস্কার করা হবে। জনগনের নিত্য প্রয়োজনীয় বর্জ্য নির্ধারিত যায়গায় ফেলার জন্য এরই মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোট ১২টি উন্নত ডাষ্টবিন তৈরী করা হয়েছে। সেখানে রাত পোহাবার পূবেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা উপস্থিত হয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ময়লা অপসারন করে যাচ্ছে। জানা গেছে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাবতীয় বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরীর জন্য ভুমি অধিগ্রহনের প্রয়াস চলছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। বিসিসির কাজে আধুনিকায়নের লক্ষে উন্নত ডাটা বেইজও ছারভার ও প্রতিটি বিভাগে নেটওয়াকিং এর আওতায় আনয়নের কাজ এগিয়ে চলছে বলে বিসিসি সুত্রে জানা গেছে।

তাছাড়া কর্পোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এখন থেকে অনলাইন এর আওতায় নিয়ে আনা হবে। এতে করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি বা পক্ষপাতিত্তের সুযোগ থাকবেনা। সে লক্ষে বিসিসির অপর শাখায় এ্যানেক্স ভবনে ইতোমধ্যে একটি সারভার ষ্টেশন বসানো হয়েছে। বিসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান দেশ জনপদকে বলেন, মেয়র মহাদয় সুনিশ্চিত নগরসেবা প্রদান করন টেকশই মজবুত উন্নয়নের লক্ষে তার নির্দেশনা মোতাবেক তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ভেটেরিনারি সার্জন পরিচ্ছন্নতা

বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃরবিউল ইসলাম জানায়,রাতের বেলা জনসুবিদার্থে সকল ময়লা আবর্জনা পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে।পরিবেশ বান্ধব নগরীগড়তে মেয়রের নির্দেশনা মোতাবেক তিনি সরেজমিনে সকল অলিগলি রাস্তা ঘাট পরিদর্শন করে।যাতে করে কোথাও কোন ময়লা আবর্জনা পরে না থাকে।হিসাব রক্ষন শাখার কর্মকর্তা জানায় স্থায়ী ৪৪৭ জন কর্মকর্তা,কর্মচারী ও অস্থায়ী ১৫শ ২৩ জন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিক দের পূর্বের সকল বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এ্যাস্টেট অফিসার মাহবুবুর রহমান শাকিলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মেয়র মহাদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সিটির খালগুলোর পরিমাপ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

ইতোমধ্যে রুপাতলী খালের দখল কৃত জায়গা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে দখলমুক্ত করা সম্পুর্ন হয়েছে।এছাড়া চৌমাথা বাজার সংলগ্নের প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ সম্পুর্ন হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য মেয়রের নির্দেশনা মোতাবেক জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।এদিকে এ বিষয়ে বিসিসি’র পরিসংখ্যান বিদের দায়িত্ব থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব পাওয়া স্বপন কুমার রোহানের কক্ষে গেলে তাকে না পাওয়ায় তার মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলে তিনি রিসিভ না করায় নগর উন্নয়নের মেয়রের নানান উদ্যোগের কার্যক্রমের তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দেশ জনপদকে বলেন, নগরবাসীদের ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় সিটি কর্পোরেশন চলে তাদের টাকা বেখাদে যাতে ব্যয় না হয় সে বিষয়ে কঠোর ভাবে নির্দেশনা দেয়া আছে। নাগরীকদের কাঙ্খিত সেবা পৌছে দেয়াই তার মূল লক্ষ।জলাবদ্ধতা নিরসন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করন, সড়ক প্রসস্থ করা মজবুত অবকাঠামো নির্মাণ করতে মাষ্টার পরিকল্পনা মাফিক কাজ করবেন। বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। শীঘ্রই প্রকল্পের অনুমোদন হয়ে বরাদ্দ আসলে সকল উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু করা হবে। দেশের মধ্যে নগর সেবা টেকশই পরিবেশ বান্ধব ডিজিটাল সিটি কর্পোরেশন হিসেবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে সবার শীর্ষ স্থানে নিতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।