#

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায়ে বাবরি মসজিদের জমি হিন্দুদের প্রদান করে মুসলিমদের মসজিদ নির্মাণের জন্য সরকারকে পাঁচ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মুসলিমরা সেই জমি না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ভারতজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা জোরদারের মাধ্যমে শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট এ রায় দেন। ভারতের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমীনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি রায় নিয়ে বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সত্যের জয় হয়নি। রায় শিরোধার্য কিন্তু তা অকাট্য নয়।’

আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট মুসলিমদের যে খয়রাতির ৫ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকারকে তা মুসলিম সম্প্রদায় চায় না। মসজিদ নির্মাণে মানুষের কাছে চাইলেই ৫ একর জমি পেতে কোনো সমস্যাই হবে না। সরকারের খয়রাতি জমির কোনো প্রয়োজন নেই।’

হায়দরাবাদের সাংসদ বলেন, ‘আমরা আমাদের আইনি অধিকারের জন্য লড়ছি। ভারতের মুসলমানদের এত খারাপ দিনও আসেনি যে খয়রাতির জমি নিতে হবে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের ব্যাপার। আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হলো, মুসলিমদের এই ৫ একরের প্রস্তাব খারিজ করা উচিত।’

অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়ায় মুসলিমদের সংগঠন ‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড অসন্তোষ প্রকাশ করে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বলছে, রায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী কি পদক্ষেপ নেয়া যায়; সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে অযোধ্যা মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস। শনিবার রায়ের আগেই দিল্লিতে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলীয় অবস্থান ঠিক করা হয়। রায় ঘোষণার পর কংগ্রেসের তরফে দলের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিং সূরজেওয়ালা এ নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছে। আমাদের দল দ্রুত রামমন্দির তৈরির পক্ষে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে যেমন মন্দির তৈরির রাস্তা খুলে গেল, তেমনি বিজেপির জন্য এই ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করার পথও বন্ধ হয়ে গেল।’

কংগ্রেস মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আদালতের এই রায় যাতে কোনোভাবেই কোনও ব্যক্তি, কোনও সংগঠন, কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক লাভ না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।’ এছাড়া দেশবাসীকে শান্তি এবং সৌহার্দ্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার হওয়ার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে সম্মান জানিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখতে হবে। এটা সব ভারতীয়র মধ্যে বন্ধুত্ব, প্রেম আর ভ্রাতৃত্বের সময়। বিবাদ আর কাম্য নয়।’

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন