কোপা আমেরিকার ফাইনালটা হতে যাচ্ছে ‘স্বপ্নের ফাইনাল’। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ফাইনাল হোক- সবাই চেয়েছিল। সেই কাঙ্ক্ষিত ফাইনালটাই হতে যাচ্ছে রোববার বাংলাদেশ সময় ভোরে। স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচে সবার চোখ মেসি এবং নেইমারের দিকে।
ফুটবল বিশ্বে বর্তমান সময়ের সেরা দুই তারকার মুখোমুখি লড়াই উপভোগ্য হবে এটা নিশ্চিত। এই দু’জনের যে কেউ বদলে দিতে পারেন ম্যাচের ভাগ্য। সেই সামর্থ্য আছে দু’জনেরই। এ কারণে, পুরো ফুটবল বিশ্বেই জ্বল্পনা-কল্পনা চলছে তাদের দু’জনকে নিয়েই।
কিন্তু মেসি-নেইমারকে নিয়ে যত বেশি আলোচনা হচ্ছে, ম্যাচে গিয়ে তারা দু’জন যদি ফ্লপ হয়ে যান, অতিরিক্ত নজরবন্দী থাকেন, ট্যাকলের শিকার হন, তাহলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন কে?
এ কারণে আলোচনা চলছে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার ভেতরে বিকল্প শক্তি নিয়েও। আর্জেন্টিনা দলটা পুরোপুরি মেসি নির্ভর। এখনও পর্যন্ত তিনি চারটি গোল করেছেন, ৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন। অন্যদিকে নেইমার গোল করেছেন ২টি, অ্যাসিস্ট করেছেন ৩টি। ব্রাজিল শুধুমাত্র নেইমার নির্ভর নয়। দলটিতে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মত একাধিক ফুটবলার রয়েছেন।
কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে লুকাস পাকুয়েতার গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্রাজিল। চিলির বিপক্ষে তিনি ছিলেন বদলি খেলোয়াড়। সেমিফাইনালে খেলেছেন পুরোটা সময়। এছাড়া রিচার্লিসন যে খেলা খেলছেন টুর্নামেন্টের শুরু থেকে, তাকে আর্জেন্টিনা কেন, যে কোনো দলের জন্যই হতে পারেন তিনি বিপজ্জনক।
এভার্টনও ব্রাজিলের হয়ে ম্যাচের মোড় পরিবর্তনের সুযোগ নিতে পারেন। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে ব্রাজিলের ভরসার নাম ক্যাসেমিরো। মেসিকে আটকে দেখার ক্ষেত্রে তিনি মুন্সিয়ানা দেখাতে সক্ষম হবেন হয়তো। সে ক্ষেত্রে মেসি নিজের ক্যরিশমা দেখানো সম্ভব নাও হতে পারে। সঙ্গে আছেন ফ্রেড। তিনিও মিডফিল্ডে বেশ ভালো পজিশন নিয়ে খেলে যাচ্ছেন।
ডিফেন্সে ব্রাজিলের হাতে রয়েছেন বিশ্বের সেরা চারজন ডিফেন্ডার। থিয়াগো সিলভাকে এখনও মনে করা হয় সেরা ডিফেন্ডার। সঙ্গে রেনান লোদি, মার্কুইনহোস, দানিলো রয়েছেন। এরা নিজ নিজ ক্লাবে সেরা ডিফেন্ডার। পোস্টের নিচে রয়েছেন এডারসন। যার ওপর আস্থা রাখা যায়।
সাইডবেঞ্চও কম শক্তিশালী নয়। রবার্তো ফিরমিনোর মত স্ট্রাইকার থাকেন সাইড বেঞ্চে। ডিফেন্সে এডার মিলিটাও, মিডফিল্ডে রয়েছেন ফ্যাবিনহো, ডগলাস লুইজ, আক্রমণে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, এভার্টন রিবেইরো, গ্যাব্রিয়েল, ওয়েভার্টন এবং পোস্টের নিচে সাইডবেঞ্চে রয়েছেন অ্যালিসনের মত গোলরক্ষক।
আর্জেন্টিনা মেসি যদি কোনো কারণে স্টপ হয়ে যান, তাহলে দলটির ভরাসর প্রতীক হয়ে আছেন লওতারো মার্টিনেজ, রদ্রিগো ডি পল, নিকোলাস গঞ্জালেজের মত ফুটবলার। মিডফিল্ডে জিওভানি লো সেলসো, গুইদো রদ্রিগেজরা রয়েছেন। যারা পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে এসেছেন।
নেইমারকে আটকানোর জন্য ডিফেন্সে রয়েছেন তালিয়াফিকো, ওতামেন্দি, পেজেল্লা, নাহুয়েল মোলিনার মত ফুটবলার। আর গোলরক্ষকের কথা না বললেই নয়। এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। যিনি তিনটি পেনাল্টি শট ঠেকিয়েছিলেন সেমিফাইনালে।
সাইডবেঞ্চের দিকে তাকারেও চোখ কপালে ওঠার কথা। এঞ্জেল ডি মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরোর মত ফুটবলারকে বসে থাকতে হয় সাইড বেঞ্চে। এছাড়া রয়েছেন আলেহান্দ্রো গোমেজ। অ্যাঞ্জেল কোরেয়ার মত ফুটবলাররা।
সুতরাং, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, মেসি কিংবা নেইমার যদি নিজেদের সেরাটা দেয়ার সুযোগ না পান, তাহলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মত শক্তি ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা দলে রয়েছে। দুই সেরা তারকাকে ছাড়াও নজর রাখা যায় অন্যদের দিকে।