আর্জেন্টিনা ভক্তদের চোখ মেসির দিকে শেটে ছিল। আগেরদিন দারুণ এক হ্যাটট্রিক করেছেন রোনালদো। মেসিও হয়তো যাদুকরী কিছু দেখাবেন। কিন্তু পেনাল্টি মিস করে সমর্থকদের হতাশ করলেন লিওনেল মেসি।
প্রথমার্ধে ১-১ গোলে সমতার পর ম্যাচ জয়ের দারুণ এক সুযোগ ছিল আর্জেন্টিনার সামনে। কিন্তু মেসির ব্যর্থতায় আইসল্যান্ডের বিপক্ষে জয়হীন থাকলো হলো তাদের। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে এসে আইসল্যান্ড ঠেকিয়ে দিল আর্জেন্টিনাকে।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটের মাথায় মেজার ক্রস থেকে বক্সে বল পায় মেসি। কিন্তু আইসল্যান্ড ডিফেন্ডারের ট্যকলে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি মেসি। ‘ভিএআর’ রিপোর্ট অনুযায়ী মেসি পেনাল্টি পান। কিন্তু আইসল্যান্ড গোলরক্ষক হ্যাল্ডারসন দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন তার শট।
এরপরও অবশ্য আর্জেন্টিনা দারুণ আক্রমণ শানিয়ে গেছে। দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময়ই ‘বরফের দৈত্যদের’ বক্সের কাছে ঘোরাঘুরি করেছে। কিন্তু গোল করতে পারেনি।
আইসল্যান্ডের খেলোয়াড়দের প্রায় সবার উচ্চতা ৬ ফুটের কাছাকাছি। তাদের তৈরি করা দেয়ালে বার বার অাটকে গেছে মেসি এবং তার দলের আক্রমণ। পাভন বদলি হিসেবে মাঠে নামার পর ম্যাচের ৭৭ মিনিটে আবার পেনাল্টির আবেদন করেন। কিন্তু রেফারি তা নাকচ করে দেন। এর ৭৯ মিনিটে মেসি ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট নেন। বলটি যায় গোলের পাশ ঘেসে।
এরআগে প্রথমার্ধে শুরু থেকেই বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খেলা আর্জেন্টিনার গোল পেতে বেশি দেরি হয়নি। ম্যাচের ১৯ মিনিটের মাথায় আগুয়েরোর গোলে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। ম্যানসিটির এই তারকা এ ম্যাচে হিগুয়েইনের বদলে শুরুর একাদশে জায়গা পান। দলে সুযোগ দেওয়ায় আস্থার জবাব দেন তিনি।
কিন্তু আগুয়েরোর গোলের লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি মেসির দল। মাত্র চার মিনিট পরই ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় গোল করে সমতায় ফেরে আইসল্যান্ড। গোল করেন ফিনবোগাসন।
জটলার মধ্যে আইসল্যান্ডের নেওয়া প্রথম শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকান আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক ক্যারায়েরো। কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেনি তিনি। ফিরতি বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেয় ১১ নম্বর জার্সির ফুটবলার। এর আগে ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় মেসির নেওয়া ফ্রি কিক থেকে আর্জেন্টিনার গোল করার ভালো একটি সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু গোলবারের বাইরে দিয়ে যায় সে বল। ৮ মিনেটের মাথায় আবার মেসির ফ্রি কিকে গোলের সুযোগ। এরপর ১৭ মিনিটে গোলমুখে প্রথম শট নেন মেসি। তবে গোল হওয়ার জন্য তা যথেষ্ঠ ছিল না। তারপর ১৯ মিনিটে গোল করেন আগুয়েরো। প্রথমার্ধের শেষ সময়ে আইসল্যান্ডকে সমতা এনে দেওয়া ফিনবোগাসন আরও একটি ভালো আক্রমণ করেন।
শনিবার মস্কোয় ডি গ্রুপের এ পুরো ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৭৮ শতাংশ বল নিজেদের পায়ে নিয়ে খেলে। অপরদিকে আইসল্যান্ডের বল পায়ে ছিল মাত্র ২২ শতাংশ। আলবেসেলেস্তাদের ৭৫২ সফল পাসের বিপরীতে আইসল্যান্ড পাস দিয়েছে মাত্র ২০৮টি। আর্জেন্টিনা গোলের লক্ষ্যে ও বাইরে নিয়েছে ১৭টি শট। আইসল্যান্ডের এই সংখ্যা মাত্র ৭টি। প্রথমার্ধে সব দিক থেকে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধেও তাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডি গ্রুপের এ ম্যাচে সমতায় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদের।