ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর কড়া সমালোচনা চলছে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের। স্বভাবতই সে সমালোচনার কেন্দ্রে আছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। পরশু রাতে আক্ষরিক অর্থেই নিজের ছায়া ছিলেন তিনি। একটা পরিসংখ্যানেই পরিস্কার বোঝা যায় কতটা নিষ্প্রভ ছিলেন আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা।
প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক কাবায়েরো (২২) যতবার বল ধরেছেন, তার চেয়েও নাকি কম গেছে মেসির (২০) পায়ে বল! আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি পোস্টে ১১টি শট নিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলপোস্টে মাত্র একটি শট নিতে সক্ষম হন তিনি! মেসিকে এভাবে বোতলবন্দি করে রাখার রহস্যটা ম্যাচ শেষে ফাঁস করেছেন ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক লুকা মডরিচ। মেসির কাছে বল যাওয়ার রাস্তাটাই নাকি তারা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ১৯৯৮ সালের পর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। আর এ হারে খাদের কিনারায় চলে গেছে আর্জেন্টিনা। মেসিরও এবারের বিশ্বকাপ ভালো যাচ্ছে না। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি তিনি। তার পরও ওই ম্যাচে বেশ কয়েকটি আক্রমণ গড়েছিলেন তিনি। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তো বলতে গেলে কিছুই করতে পারেননি মেসি। ঠিকমতো নড়াচড়াই করতে পারেননি।
আর্জেন্টাইন বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম রিপোর্ট করেছে, মেসি নাকি মাঠে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। অবাক ব্যাপার হলো, মেসিকে কিন্তু এত কড়া মার্কিংও করেনি ক্রোয়েশিয়া। তবে এভাবে তাকে শান্ত রাখার রহস্যটা ফাঁস করতে গিয়ে মডরিচ বলেছেন, মেসির কাছে বল যাওয়ার রাস্তাটাই তারা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, ‘আমরা ভালো খেলেছি বলেই আর্জেন্টিনা কিছু করতে পারেনি। আমাদের রক্ষণভাগ নিশ্ছিদ্রভাবে সব আক্রমণ ঠেকিয়ে দিয়েছে। মাঠের সর্বত্রই আমরা এটা করেছি। বিশেষ করে যখন আমাদের পায়ে বল ছিল না, তখনই আমরা তাদের প্রতিহত করেছি। এগোতে দেইনি, পাস দেওয়ার সময় বাধা সৃষ্টি করেছি। বিশেষ করে মেসি যেন বল ধরতে না পারে সে কাজটা আমরা খুব ভালোভাবে করেছি। তার কাছে পাস দেওয়ার পথটা আমরা আটকে দিয়েছিলাম। সে হলো তাদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খেলোয়াড়।’
কীভাবে মেসির কাছে বল যাওয়াটা আটকেছেন সেটাও খোলাসা করেছেন মডরিচ, ‘মেসি অসাধারণ ফুটবলার। কিন্তু সে একা তো সব কিছু করতে পারবে না। শুরুতেই আমরা ফাঁকা জায়গা কমিয়ে দিয়েছিলাম যেন মাসচেরানো তাকে (মেসি) পাস দিতে না পারে। পরে আমরা যখন ছন্দ পেয়ে যাই, তখন আর এত ভাবতে হয়নি। আমরা তখন দুর্দান্ত খেলতে থাকি।’ মেসির কাছে যেন বল না যায় সে কাজটা করেছে ক্রোয়েশিয়ার মধ্য মাঠ। এর পরও আরও একজন কড়া পাহারায় রেখেছিলেন মেসিকে। তিনি হলেন স্টপারব্যাক লভরেন। অসাধারণ খেলেছেন লিভারপুলের এ ক্রোয়াট ডিফেন্ডার। শুধু মেসিকে আটকে রাখাই নয়; আগুয়েরো-মেজাদেরও পোস্টে শট নিতে দেননি তিনি।