প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈদেশিক আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত নয় বরং ত্বরান্বিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সবক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন মোতাবেক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন থাকায় প্রকল্প সংক্রান্ত আমদানি ব্যয়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্যে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।’
বুধবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
সরকার প্রধান জানান, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকালে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পকেন্দ্রিক অনেক ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। ফলে পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা মূলত ব্যাহত হওয়ার পরিবর্তে ত্বরান্বিত হচ্ছে।
অধিকাংশ বৈদেশিক ঋণের প্রকৃতি নমনীয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঋণের সুদের হার তুলনামূলক অনেক কম এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ও গ্রেস পিরিয়ডও অনেক। ঋণের অর্থ অবমুক্তির ক্ষেত্রে বড় কোনো জটিলতা পরিলক্ষিত হয়নি।’
ফখরুল ইমামে আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত পদ্মা সেতুসহ চলমান ১৬টি মেগা প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এর মধ্যে তিনি ১৪টি প্রকল্পের ব্যয়ের তথ্যও উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যমতে, এসব প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় চার লাখ ৮৯ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন প্রায় এক লাখ ৫৪ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ তিন লাখ ৩৫ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অবনতি ঘটে, ফলে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হলো, দেশের অভ্যন্তরে কিছু অসাধু ব্যক্তি এ সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুত ও মূল্যবৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, সেই অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ মজুত, বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রীকে উপদেষ্টা করে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সভাপতি করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থা/গোয়েন্দা প্রতিনিধি এবং এফবিসিসিআই-সহ ১৭ সদস্যের এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ মজুত ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে তিনি সংসদে বর্ণনা করেন।