মৃত্যু খবরের ৯ বছর পরও বেঁচে ছিলেন হিটলার: সিআইএ

:
: ৭ years ago

অ্যাডলফ হিটলার একটি নাম, একটি ইতিহাস।  জার্মানির উগ্র জাতীয়তাবাদের জনক তিনি।

বলা হয়ে তাকে তার এই উগ্র জাতীয়তাবাদ ও আগ্রাসী মনোভাবের কারণে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।  আর ইতিহাস বলে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজের ভূগর্ভস্থ গোপন বাঙ্কারে ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল সায়ানাইড পানে তিনি আত্মহত্যা করেন। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে তৎকালীন সোভিয়েত বাহিনী সনাক্ত করে এবং এরপর গোপন কোনো স্থানে কোনোরকম চিহ্ন না রেখে লাশটি কবর দেয়।

কিন্তু মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ সম্প্রতি এমন কিছু সরকারি গোপন নথি প্রকাশ করেছে যেগুলো অনুসারে, মৃত্যুর খবরের ৯ বছর পরেও ১৯৫৪ সালে হিটলার বেঁচে ছিলেন এবং ইউরোপ থেকে পালিয়ে কলম্বিয়ায় লুকিয়ে ছিলেন – এমন একটি তথ্য তদন্ত করছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ব্যাপক আলোচিত ও রহস্যময় হত্যাকাণ্ড ও এর তদন্ত বিষয়ক তথ্যের দলিলাদি গত সপ্তাহে প্রকাশের সঙ্গে হিটলার জীবিত না মৃত, এই তদন্তের অনেক নথিপত্রও প্রকাশ করা হয়। সেখানেই মেলে এসব তথ্য।

প্রকাশিত প্রথম দলিলে ১৯৫৫ সালের ৩ অক্টোবরের তারিখ দেয়া।   সেখানে দেখা যায়, ‘সিআইমেলোডি-৩’ (CIMELODY-3) ছদ্মনাম দেয়া এক সিআইএ গোয়েন্দার সঙ্গে ‘এক বিশ্বস্ত বন্ধু’ যোগাযোগ করেছিলেন, যিনি ওই সময় ভেনেজুয়েলার মারাকাইবোতে বসবাস করছিলেন এবং এর আগে তার অধীনে ইউরোপে দায়িত্বরত ছিলেন।

কাগজে নাম প্রকাশ না করা ওই বন্ধু জানান, ফিলিপ সিট্রোন নামের এক সাবেক জার্মান এসএস সেনা সদস্য তাকে বলেছেন হিটলার এখনো বেঁচে আছেন এবং যেহেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দশ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, সেহেতু তাকে আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে শাস্তি দেয়া যাবে না।

ওই দলিলে আরও বলা হয়, সিট্রোন ওই সময় মাসে একবার ব্যবসার কাজে কলম্বিয়া যেতেন এবং তখনই সেখানে লুকিয়ে থাকা হিটলারের সঙ্গে দেখা করে আসতেন।

সিট্রোন সিআইমেলোডি-৩’র বন্ধুর কাছে হিটলারের পাশে বসে তোলা নিজের একটি ছবিও পাঠান, যার পেছনে লেখা ছিল: অ্যাডলফ শ্রিটেলমেয়র, তুনজা, কলম্বিয়া, ১৯৫৪। এই ছবিও হিটলার সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে প্রকাশ করেছে সিআইএ। সিট্রোনের তথ্য মতে, ১৯৫৫ সালের জানুয়ারির দিকে সাবেক এই স্বৈরশাসক আর্জেন্টিনা চলে যান।

১৯৫৫-এর ১৭ অক্টোবরের তারিখ দেয়া আরেকটি নথিতে আরও কিছু তথ্য পাওয়ার কথা জানানো হয়, যার তারিখ নির্দিষ্ট না হলেও ধারণা করা হয়েছিল তথ্যগুলো লিখে পাঠানো হয়েছিল ১৯৫৪ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে।

এই ছবির ডানে বসা ব্যক্তিকে হিটলার এবং বামে বসা জনকে নিজে বলে দাবি করেন সিট্রোন সেটাতে বলা হয়, সিট্রোন মারিকাইবোতে কর্মরত তৎকালীন এক সিআইএ সদস্যকে জানিয়েছেন, কলম্বিয়ার তুনজায় দেখতে হুবহু হিটলারের মতো একজন ব্যক্তিকে পেয়েছেন। ওই এলাকায় বহু প্রাক্তন নাৎসি সদস্য সেখানে বসবাস করত এবং তারা ওই ‘সম্ভাব্য’ হিটলারকে অনেক বেশি সম্মান দেখাত। তারা তাকে ‘দের ফিউরার’ ডাকত এবং নাৎসিদের বিশেষ স্যালুট প্রদর্শন করত।

এছাড়া হিটলারের বেঁচে থাকা নিয়ে এফবিআইয়ের গোপন অনুসন্ধান সংক্রান্ত তথ্যযুক্ত যেসব দলিলাদি একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো রয়েছে এফবিআইয়ের ওয়েবসাইটে। সেসব চিঠিপত্র ও ছবির স্ক্যান কপি দেখতে পারেন এখানে।