মৃত্যুর আগে ১০ নেপালি যাত্রীকে বাঁচিয়েছিলেন বীর নারী পাইলট

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

নেপালের কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় নিভে গেছে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের তরুণ বৈমানিক প্রিথুলা রশিদের জীবন প্রদীপ। কিন্তু জীবনের বিনিময়ে বীর ওই নারী পাইলট বাঁচিয়ে গেছেন ১০ নেপালি যাত্রীর প্রাণ।

নেপাল ভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সামাজিক মাধ্যমে এই বীর নারীকে ‘ডটার অব বাংলাদেশ’ আখ্যা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রিথুলা ছিলেন সোমবার বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের সহকারি পাইলট। শুধু তাই নয়, ইউএস বাংলার প্রথম নারী পাইলট ছিলেন তিনি।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। উড়োজাহাজটিতে থাকা ৬৭ যাত্রীর মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন মালদ্বীপের এবং একজন চীনের নাগরিক। উড়োজাহাজটিতে ৬৭ যাত্রীর পাশাপাশি ৪ জন ক্রু ছিলেন বলে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সেই হতভাগাদেরই একজন প্রিথুলা রশিদ।

কিন্তু মৃত্যুর আগেও বাংলাদেশকে গর্বিত করে গেছেন এই বাঙালি কন্যা।ইউএস বাংলা-বিমান দুর্ঘটনা-প্রিথুলা

দুর্ঘটনা কবলিত বোমবার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ উড়োজাহাজটিতে ৩৭ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারী ছাড়াও উড়োজাহাজটিতে ছিল শিশু। দুর্ঘটনায় নিজের কথা না ভেবে আগে সেই যাত্রীদের রক্ষা করার চেষ্টা করেন প্রিথুলা। দশ জন নেপালি যাত্রীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিরাপদে সরিয়ে দিতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে করতেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় প্রিথুলার।

তবে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রিথুলা রশিদের অন্যের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়নি। ওই দশ নেপালি যাত্রীর সবাই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। তারা সবাই এখন বেঁচে আছে।

ইউএস বাংলা-বিমান দুর্ঘটনা-প্রিথুলা
একজন নেপালি সাংবাদিকের তোলা ছবিতে বিধ্বস্ত বিমান

সোমবার প্লেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে গিয়ে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নেপালে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময়েই দুর্ঘটনার শিকার হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অবতরণের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আহতদের মধ্যে ১৯ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার সকালে হতাহতদের একজন করে স্বজন নিয়ে নেপালের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। ইউএস বাংলার বিশেষ ফ্রি ফ্লাইটে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ৭ জন কর্মী ও ৪০ জন স্বজন রয়েছে।