মুমিনুলের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ তামিম

:
: ৬ years ago

সর্বপ্রথম মুশফিকুর রহীম, এরপর তামিম ইকবাল এবং সর্বশেষ সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের তিন ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এই তিন ব্যাটসম্যান। এদের কাতারে এবার নাম লেখানোর দারুণ সম্ভাবনা লিটল মাস্টার মুমিনুল হকের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে মুমিনুলের রান ১৭৫। এখনও ক্রিজে রয়েছেন। আর মাত্র ২৫টি রান হলেই চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান হয়ে যাবেন তিনি।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর ইমরুল কায়েসকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল। ৭২ রানের জুটি ভাঙ্গে তাতিমের আউট হওয়ার কারণে। ৫২ রান করে আউট হন তামিম। এরপর ইমরুলের সঙ্গে জুটি বাধেন মুমিনুল। ইমরুল ৪০ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়েন মুমিনুল।

১৩৬ রানের জুটি ভাঙে মুশফিক ৯২ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর। লিটন কুমার মাঠে নেমেই আউট। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে দিনের বাকি অংশ অনায়াসেই কাটিয়ে দেন মুমিনুল। এরই মধ্যে ৯৬ বলে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত তিনি এখনও উইকেটে রয়েছেন ১৭৫ রান নিয়ে।

যে স্টাইলে মুমিনুল আজ ব্যাটিং করেছেন, তা দেখে রীতিমত মুগ্ধ বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে মুমিমুলের ব্যাটিংয়ে যে সৌরভ ছড়িয়েছে সে কথাই অকপটে স্বীকার করলেন তামিম ইকবাল। তিনি তো রীতিমত মুগ্ধ।

তামিম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় মুমিনুলের ইনিংসটা ছিলো মুগ্ধকর। প্রথমেই সে আক্রমণাত্মক ছিলো এবং সেভাবেই পুরো ইনিংস খেলে গেছে। যখন সে একশ করে, তখন তার স্ট্রাইকরেট ছিলো ১০৩! যে জিনিসটা আমাদের জন্য এই উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো; আমরা জানতাম এখানে ব্যাটিং করা সহজ হবে, বিশেষ করে প্রথম দিনে ও ওর উইকেটটা নষ্ট করেনি।’

মুমিনুলের ধৈয্যের প্রশংসা করে তামিম বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় ব্যাটিং উইকেটে বেশি উত্তেজিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলে অনেকে আউট হয়ে যায়। ও (মুমিনুল) সেটা করেনি। ও জানতো ওর উইকেটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটা বড় জুটি গড়া আমাদের জন্য খুব দরকার ছিলো। আমার মনে হয় মুশফিক ও মুমিনুল খুব ইতিবাচক ছিলো। মারার মতো বল হলে তারা মেরেছে। আমার কাছে মনে হয়, তাদের খেলাটা কমপ্লিট ছিলো। মুমিনুল যদিও নটআউট; আশা করি সে আরো অনেক দূর যাবে। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তার (মুমিনুল) কিছু প্রমাণ করার ছিলো এবং সে সেটা দারুণভাবে করেছে।’

তামিমও মনে করেন, মুমিনুলের নিজেকে প্রমাণ করার খুব প্রয়োজন ছিল। সেটা সে করতে পেরেছে। তার কাছে মুমিনুলের ব্যাটিং এবং সেঞ্চুরির পর তার সেই উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন আবার এলে তিনি বলেন, ‘এটাই তো বললাম। মুমিনুলের কিছু প্রমাণের ছিলো এবং সেটা সে করেছে। আমার কাছেও দেখে ভালো লাগছে। আমি জানি কেনো সে এটা করেছে।’

তামিমের মনে হয়েছিল উইকেটটা অনেক বেশি স্পিনিং হবে; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। তামিম বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিলো আরো বেশি স্পিন হবে; কিন্তু আমরা আগে ব্যাটিং করছি, সুতরাং এ নিয়ে আমাদের অভিযোগ নেই। আমরা যতো বেশি রান করতে পারি, আমার মনে হয় কাল থেকে রান করা কঠিন হবে। আমরা এখন শক্ত অবস্থানে আছি। এখান থেকে আমাদের আরো রান করতে হবে। যতোই ফ্ল্যাট উইকেটে খেলেন না কেনো, বড় রান সব সময়ই কঠিন অন্য দলের জন্য। সুতরাং আমাদের জন্য এটাই নিশ্চিত করতে হবে।’

কতদুর যেতে পারে বাংলাদেশ? কত রান করে থামবে টাইগাররা? তামিম মনে করেন, যে পজিশনে এখন তারা রয়েছেন, সেখান থেকে অনেক রান করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, আমরা এমন পজিশনে আছি, যেখান থেকে অনেক রান করা সম্ভব। আমরা এমন অবস্থানে থাকি না কেন, খুব ভালো একটা রেটে রান করেছি। কালও আমাদের দারুণ শুরু করতে হবে। আমরা যদি সেটা করতে পারি, যারা ড্রেসিংরুমে আছে, তারাও যদি অবদান রাখে আমরা তাহলে বড় রান করতে পারি। আমি এটাই আশা করছি।’