মিয়ানমারে ফের প্রচন্ড গোলাগুলি ও গ্রামে আগুন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইনের কয়েকটি গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ফের প্রচন্ড গোলাগুলির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। হঠাৎ করেই গুলির শব্দে সীমান্ত তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সকাল থেকে আগুনের লেলিহানশিখা ও ধোঁয়ার কুন্ডলি সীমান্তের এপার থেকে প্রত্যক্ষ করছেন স্থানীয় লোকজন।

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাখাইনের মাঙ্গালা গ্রামে এঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, রাখাইনের অনেক গ্রামে অগ্নি সংযোগ করা হলেও মাঙ্গালা গ্রামটি এতোদিন রক্ষিত ছিল। ওই গ্রাম থেকে কয়েকটি পরিবার এপারে চলে আসলেও বেশীর ভাগ পরিবার রয়ে যায়।

জানা গেছে, ওই গ্রামের লোকজন বেশীর ভাগ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। গত দেড় মাস পূর্বে ওই গ্রামের ৩ জন পাচারকারী প্রায় ৪ লাখ ইয়াবাসহ বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল। রাখাইনের প্রশাসনকে কোটি কোটি কিয়াতের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গ্রামটি রক্ষা করেছিল।

আরো জানা গেছে, ওই গ্রামের ‘হুক্কাটা’ (চেয়ারম্যান) ছিল বৌদ্ধ (মগ)। তিনি প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে টাকার লেনদেন করতেন।

তিনি সেনাদের হাত থেকে এতোদিন গ্রামটি আগুনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নতুন ভাবে গুলাগুলি ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে অজানা আতংক দেখা দিয়েছে।

এদিকে, উখিয়া সীমান্তবর্তী রাখাইনের অভ্যন্তরে ঢেকিবনিয়া গ্রামেও গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাখাইনের আরো কয়েকটি গ্রামে বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখা গেছে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক শরিফুল ইসলাম জোমাদ্দার ওপারের বিভিন্ন সীমান্তে গুলির আওয়াজের শব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সীমান্তে জওয়ানদের নিয়মিত টহল জোরদার রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হলে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও হত্যা করে সেনারা। এর ফলে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়ে পালিয়ে আসেন এবং এখনো প্রতিদিন রোহিঙ্গা পালিয়ে আসছে।

অপরদিকে, টেকনাফে নতুন করে ঢুকেছে আরো শতাধিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এসব রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

টেকনাফ থানার এস আই আশরাফুজ জামান জানান, সকাল থেকে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের ক্যাম্পে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।