মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দেশটির ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দু’দিনব্যাপী ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের
দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে ওআইসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহম্মদ (সঃ) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগতভাবে নির্মূলের মুখে ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওআইসিকে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে যাতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশে সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়।’
‘আমাদের মতো রোহিঙ্গাদেরও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার রয়েছে’— মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের দুর্দশাগ্রস্ত নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশ তার হৃদয় ও সীমান্ত খুলে দিয়েছে। সম্পূর্ণ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।’
শনিবার শুরু হওয়া ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে ৪০টি দেশের মন্ত্রী, সহকারী মন্ত্রীসহ ওআইসিভুক্ত সব রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে আগামী এক বছরের জন্য ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
এবারের সম্মেলনে ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর বাইরে কানাডা অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিয়েছে। সম্মেলনে কানাডা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়া ফ্রিল্যান্ড।
ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘ইসলামিক ভ্যালুস ফর সাসটেইনেবল পিস, সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’’ বা ‘স্থিতিশীল শান্তি, ঐক্য এবং উন্নয়নের জন্য ইসলামী মূল্যবোধ’।
সম্মেলনে মুসলিম উম্মাহ এবং ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সন্ত্রাসবাদ দমন ইস্যু বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। এর বাইরে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে পৃথক সেশনে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং এ সংকট সমাধানে সুপারিশ সংবলিত ঘোষণাপত্রও গৃহীত হবে। এ ছাড়া দারিদ্র্যবিমোচন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বিষয়েও বাংলাদেশের কিছু প্রস্তাব রয়েছে।