কাতারে যাওয়ার জন্য প্রবাসী জাফর হাওলাদারকে টাকা দেয় প্রতিবেশি অপির পরিবার। ওই টাকা ফেরত চাইলে অপিকে খুনের ভুত চাপে জাফরের মাথায়।
আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। ওই স্বীকারোক্তির সুত্র ধরে ঘটনার ৮ মাসের মাথায় ঘটনার মাস্টারমাইন্ড পলাতক জাফরকে গ্রেফতার পটুয়াখালী ডিবি পুলিশ।
১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কদমতলীর এলাকার ফাল্গুনী কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন পিকাপ স্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার হয় জাফর।
পটুয়াখালী ডিবি পুলিশের ওসি একেএম আজমল হুদা এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন। নিয়ে গ্রেফতার সংখ্যা তিন। পলতাক রয়েছে অন্যতম সহযোগী শামীম।
নিহত অপি মির্জাগঞ্জ উপজেলার চরখালী এলাকার অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আলতাফ হোসেনের ছেলে। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর খুন হয় বরিশাল হাতেম আলী কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র আরিফুর রহমান অপি।
আদালতে সাব্বিরের দেয়া স্বীকারোক্তির বরাতে ডিবি পুলিশ বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অপির বন্ধু সোলায়মান লিমন ও শরীফুল ইসলাম ওরফে সাব্বিরের সঙ্গে বাড়ীর পাশের পায়রা নদীর পাড়ে ঘুরতে যায় অপিও।
নদীর পাড়ে অবস্থান করে ডেনড্রাইট গামের নেশায় আসক্ত হয় অপি ও লিমন। কিছুক্ষন পরে অপির প্রাক্তন স্কুল সহপাঠি ও প্রতিবেশি মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে শামীম অপির মাথার নিচাংশে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে আঘাত করে।
এরপর জাফর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অপির সঙ্গে বিকবিতণ্ডায় জড়িয়ে অপির গলায় ব্যবহৃত মাফলারের এক পাশ নেটে ধরে এবং অপরপ্রান্ত শামীম নেটে ধরে মৃত্যু নিশ্চিৎ করে।
মৃত্যু নিশ্চিতের পরে চারজন একই সঙ্গে ঘটনা গোপন রাখার শপথ করে এবং রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে অপির মৃত দেহ পায়রা নদীতে ফেলে লিমন ও সাব্বির চরখালী বাজারে যায় এবং জাফর ও শামীম অন্যপথ ধরে স্থান ত্যাগ করে।
ঘটনার বরাতে ডিবি আরও বলেন, পাওনা টাকার সুত্র ধরে প্রতিবেশি জাফর হাওলাদার অপিকে খুনের পরিকল্পনা করে। যে ঘটনায় জাফররের সহযোগী ছিলেন প্রতিবেশি ও বন্ধু শরীফুল ইসলাম সাব্বির, সোলায়মান লিমন এবং শামীম।
বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ গত ২২ ফেব্রুয়ারী মামলাটির তদন্তভার দেয় ডিবি পুলিশকে।
১৩ এপ্রিল গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর আহসানুল উলুম কওমী মাদ্রাসা থেকে শরীফুল ইসলাম সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপূর্বে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ঘটনায় জড়িত অপির বন্ধু সোলায়মান লিমনকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের গজপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পটুয়াখালী র্যাব-৮ এর সদস্যরা।
তবে র্যাবের হাতে আটক হওয়া লিমনের স্বীকারোক্তি নিয়ে ঘোর আপত্তি দিয়েছে নিহত অপির পরিবার। সাব্বির ও লিমন বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
নিহত অপির বড় বোন ইয়াসমিন বলেন, প্রতিবেশি জাফর হাওলাদার কাতার প্রবাসী। ঘটনার দুই বছর পূর্বে অপিকে বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া প্রতিশ্রুতিতে তার আলতাব হেসেনের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নেয় জাফর।
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের একপর্যায় কাতার থেকে জাফর বাড়ীতে আসলে জাফরের কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হলে জাফর টালবাহানা শুরু করে। খুনের ঘটনার আগের দিন এনিয়ে জাফরের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে অপি।
এসময় জাফর অপিকে প্রাঁণ নাশের হুমকীও দেয়। কিন্তু আমরা বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করেছি। ২৮ ডিসেম্বর অপি নিখোঁজ হলে আমরা থানায় জিডি করি।
নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় পায়রা নদীর অপর প্রান্ত পটুয়াখালী সদর উপজেলা ছোচবিঘাই এলাকায় অপির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন বাবা।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com