কথা ছিল নেপাল থেকে ফিরে বিয়ে করবে আলিফ। বিয়েতে অনেক ধুমধাম হবে। কিন্তু আকশ্মিক দুর্ঘটনায় এলোমেলো হয়ে গেলো পুরো পরিবারের স্বপ্ন। মাত্র পড়াশোনা শেষ হয়েছে। চার দিনের ভিসায় নেপাল গিয়েছিলেন বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে।’কথাগুলো বলছিলেন কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত খুলনার আইচগাতির তরুণ ঠিকাদার আলিফুজ্জামানের ছোট মামা আনিছুজ্জামান।
আজ নিহতের বাড়িতে দেখা যায় শোকাবহ পরিবেশ। শোকের সবগুলো পথ যেন মিশেছে এই বাড়িতে। বিমানে চড়ার মুহূর্তে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বন্ধুবান্ধবদের সাথে যোগাযোগ করেন আলিফ। বিমানের ছবিসহ দেন সর্বশেষ স্ট্যাটাস। তাতে লেখা ছিল-‘বাই বাই খুলনা … ওয়েলকাম ঢাকা।’
মায়ের খুব আদরের ছিল আলিফ। শখ ছিল মাকে নিয়ে দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর। যেখানেই যেতেন মায়ের জন্য কেনাকাটা করতে ভুলতেন না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা মনিকা পারভীন জানান, ‘আমার ছেলে আমার প্রাণ। আমাকে কোন কষ্ট করতে দিতো সা। সবসময় কাছে কাছে থাকতো। বলেছিল মা, নেপাল গিয়েই তোমাকে ফোন করবো। আমার ছেলে আর আমাকে মা বলে ডাকবে না!’
এদিকে সন্তান হারানো কষ্ট মেনে নিতে পারছেন না বাবা মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান। সান্তনা খুঁজছেন হয়তো এখনো বেঁচে আছে তার আদরের ধন। বললেন, এখনো তো অনেকর পরিচয় নিশ্চিত হয়নি। হয়তো আমার সন্তান বেঁচে আছে। আমার সারাজীবনের পূন্যের বিনিময়ে হয়তো আমার সন্তানকে ফিরে পাবো। আলিফকে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান পুরো পরিবার। সময় যত গড়াচ্ছে ততই স্বজনদের ভিড় বাড়ছে, বাড়ছে শোকের মাতম।