মায়ের সাক্ষ‌্যে এসআইয়ের কারাদণ্ড

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

যৌতুকের মামলায় মায়ের দেওয়া সাক্ষ্যে ছেলে আজম মাহমুদ নামে এক পুলিশ অফিসারের তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর বিচারক দণ্ডিত আজম মাহমুদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

আদালতের পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এসআই আজম মাহমুদ মামলার কারণে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে সর্বশেষ কুষ্টিয়ার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের বজলুর রশিদের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার একরাম আলীর মেয়ে রাবেয়া আক্তারকে বিয়ে করেন আজম মাহমুদ। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করেন আজম।

 

পুলিশের এএসআই পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য দেড় লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এসআই পদে পদোন্নতির জন্য ফের পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক নেন। এরপরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকলেও স্ত্রী-সন্তানকে নিজের কাছে নিয়ে যেতেন না আজম। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় চাকরিকালে জান্নাতুল নামে এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি। এ বিষয়ে আপত্তি তোলায় ফের নির্যাতন শুরু হয় রাবেয়ার ওপর।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৭ জুন দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয় নিয়ে কথা ওঠানোয় রাবেয়াকে বেধড়ক মারপিট করেন আজম। পাঁচ লাখ টাকা না দিলে তাকে নিয়ে সংসার করবেন না বলে রাবেয়াকে সাফ জানিয়ে দেন। এমনকি বাড়ি থেকে বেরও করে দেন রাবেয়াকে।

এ ঘটনার পর স্বামী-শ্বশুরসহ ছয় জনকে আসামি করে ২০১৯ সালের ১১ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে যৌতুকের মামলা করেন রাবেয়া আক্তার। পরবর্তীতে আদালত আজম মাহমুদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন।

 

পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, এ মামলায় আজম মাহমুদের বিরুদ্ধে তার গর্ভধারিণী মা ফিরোজা বেগম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আদালতে পুত্রবধূর ওপর গা শিউরে ওঠা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজম মাহমুদকে বিচারক তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

রায় ঘোষণা শেষে বিচারক দণ্ডপ্রাপ্তকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।