মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার দাবিতে জোর তদবির শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে তাঁকে মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করতে অনলাইনে করা এক আবেদন করা হয়েছে। গত শনিবার ওই আবেদন দেওয়ার পর তাতে স্বাক্ষর করেছেন লাখের বেশি মানুষ।
দ্য স্টার অনলাইন ও চ্যানেল নিউজ এশিয়ার খবরে বলা হয়েছে, চেঞ্জ ডট ওআরজি নামের একটি অনলাইনে মাহাথির মোহাম্মদকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার জন্য আবেদন (পিটিশন) করা হয়েছে। এতে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা, শান্তিতে নোবেলজয়ী ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে মাহাথির মোহাম্মদকে তুলনা করা হয়েছে। আলেকজান্দ্রিয়া আবিসেগাম নামের একজন নারী চেঞ্জ ওআরজিতে (change.org) গত শনিবার ২৬ মে অনলাইনে এ আবেদন করেন। আবেদনের দুই দিনের মধ্যেই মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সোমবার রাত নয়টা পর্যন্ত আবেদনে ১ লাখ ৩ হাজারের বেশি স্বাক্ষর পড়েছে।
আবিসেগাম তাঁর আবেদনে লিখেছেন, মাহাথিরের ‘দৃঢ়তাকে স্বীকৃতি দিতে’ নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাঁকে মনোনীত করা উচিত। তিনি লিখেছেন, ‘তুন মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার জন্য স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, মাহাথির খোলাখুলিভাবে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন এবং তাঁর অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এটি তাঁকে প্রকৃতপক্ষে ‘মহৎ মানুষে পরিণত করেছে’। একই সঙ্গে এটি তাঁকে একজন অনুসরণীয় নেতার মর্যাদা এনে দিয়েছে।’
বুড়ো বয়সে ভেলকি দেখিয়ে আবার নির্বাচনে জয় পাওয়া মাহাথিরকে আবেদনে মালয়েশিয়ার ‘ম্যান্ডেলা’ হিসেবে অবিহিত করেছেন আবিসেগাম। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা স্থানান্তরে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিরও প্রশংসা করা হয়েছে।
১৯৮১ সাল থেকে টানা ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০০৩ সালে অবসরে যান মাহাথির। তাঁর শাসনামলে মালয়েশিয়াকে অনেকে ‘এশিয়ার ইউরোপ’ বলতেন। কিন্তু তাঁরই শিষ্য নাজিব রাজাক ক্ষমতা গ্রহণের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় দুর্নীতি ও নানা কেলেঙ্কারির কারণে ৯২ বছর বয়সে আবারও রাজনীতির মঞ্চে ফেরেন মাহাথির।
মাহাথির নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবেন কি না, সেটি বড় কথা নয়। তবে জনগণের এই ভালোবাসা তাঁর জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। নোবেল পুরস্কারের জন্য একজন ব্যক্তির মনোনয়নের এ বছরের সময়সীমা ছিল ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সে ক্ষেত্রে ৯২ বছর বয়সী মাহাথিরের নোবেল এ বছর পাওয়াটা অনেক যদি-কিন্তুর ওপরই নির্ভর করবে।
নোবেল প্রাইজ কমিটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩৩০ জনকে মনোনীত করা হয়েছে।