মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের সাঁড়াশি অভিযানে ৫ শতাধিক অবৈধ বিদেশি গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থ্রি-প্লাস ওয়ানের মাধ্যমে অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ শেষ হওয়ার পরপরই ৩১ আগস্ট দেশটির স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহর থেকেই গোটা মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের গ্রেফতার করা হয়।
তবে দেশটির অভিবাসন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩৯৫ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি শনিবার রাতে নিশ্চিত করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা এখনও অভিবাসন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
এদিকে শনিবার দিনভর অবৈধ অভিবাসী বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় একজন মহিলা ইমিগ্রেশন অফিসার আহত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ অভিযানের ফলে মালয়েশিয়ায় বাঙালি অধ্যুষিত কোতারায়া এলাকা এখন ফাঁকা। এছাড়াও বাস গুলোতেও আর দেখা মিলছে না বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের। অভিযানের ফলে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে একাধিক মালিক এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন ভিসা থাকার সত্বেও গ্রেফতার হচ্ছেন।
এ দিকে এজেন্টর নামে ভিসা করে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করলেও অভিবাসন বিভাগ বলছে অনুমতি বিহীন অন্য জায়গায় কাজ করলেই তাদেরকে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত করা হবে।
ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান দাতুকে সেরি মুন্তফার আলী শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, সম্ভাব্য সব জায়গায় আমাদের অভিযান পরিচালিত হবে এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের আইনের আওতায় আনতে পারছি আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধ শ্রমিক এবং মালিকদের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। বিভিন্ন সময়ে অবৈধ অভিবাসী ধরা পড়লেও এবারের অভিযানের বেলায় রয়েছে ভিন্ন।
সর্বোচ্চ ৫০ হাজার রিঙ্গিতসহ জেল জরিমানার বিধান রয়েছে। তিন বাহিনীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় অবৈধ অভিবাসী মুক্ত করা হবে বলে জানালেন অভিবাসন বিভাগের প্রধান।
এ দিকে যে তিন বাহিনী দিয়ে এবারো অভিযান সাজানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন। ইমিগ্রেশন, পুলিশ ও রেলা। অবৈধ অভিবাসীদের বাসস্থান ও কর্ম ক্ষেত্র চিহ্নিত করার জন্য রয়েছেন বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করবে অভিবাসন বিভাগ। এছাড়াও পরিত্যক্ত ঘর, ব্রিজের নিচে ও জঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, বিদেশি নাগরিক দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান আরো জোরদার করা হবে। এছাড়া কাজের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করলে তাকেও অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে। আর অবৈধ হিসেবে ধরা পড়লেই ব্ল্যাকলিস্টসহ জেল জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।
অভিবাসীদের জনসমাগমসহ একত্রিত হতে দেখলেই অভিবাসন বিভাগের ফেসবুক পেজে অথবা টেলিফোন নাম্বার এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তথ্যদাতাদের পরিচয় গোপন রেখে অভিযান পরিচালনা করা হবে। শুধু অবৈধ অভিবাসী সন্ধানে নয় বরং তাদের মালিককেও আইনের মুখোমুখি করা হবে এবারের অভিযানে।
গ্রেফতারকৃতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার আউট পাস সংগ্রহ করতে দেয়া হবে না বলে জানালেন অভিবাসন বিভাগের প্রধান মুস্তফার আলী।