পার্লামেন্টে দুই দফা হারের পরও কথার তেজ কমেনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কোনো চুক্তি ছাড়াই নির্ধারিত তারিখে কার্যকর করা নিয়ে বরিস বলেছেন, তিনি খাদের কিনারে গিয়ে যাদি মারা যান তবুও ব্রেক্সিট পেছাবেন না।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী বরিস জনসন বলেছেন, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদে পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি। কিন্তু বরিসকে হারিয়ে সংসদীয় কার্যবিধির নিয়ন্ত্রণ পাওয়া বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট আটকাতে তারা বদ্ধ পরিকর।
ব্রেক্সিট কার্যকরে নিজের এমন দৃঢ় অবস্থানের কথা জানালেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, যদি নির্ধারিত তারিখ ৩১ অক্টোবর থেকে পিছিয়ে আরও দীর্ঘায়িত করা হলে পদত্যাগ করবেন কিনা তখন তিনি সে সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।
গতকাল ওয়েকফিল্ডের পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দেয়া বক্তৃতায় বরিস জনসন ফের তার আগাম নির্বাচনের কথা বলেছেন। তিনি চান আগামী ১৫ অক্টোবর ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তিনি এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি (ব্রেক্সিট) সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এটাই একমাত্র পথ।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ছোট ভাই জো জনসন ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ও তার ভাইয়ের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ভাই বরিস জনসন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী হলেও ২০১৬ সালের গণভোটে তিনি যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
জো জনসন বলেছেন, পারিবারিক আনুগত্য এবং জাতীয় স্বার্থের মধ্যে সংঘাতের কারণে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক টুইটে ভাই বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার বাণিজ্যমন্ত্রী জো জনসন বলেন, তিনি এক অপরিসীম উদ্বেগের মধ্যে আছেন। তার স্থানে এখন অন্য কারো আসার সময় হয়েছে।
বরিসের চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট (নো ডিল ব্রেক্সিট) আটকাতে বিরোধী দলের তোলা প্রস্তাব নিয়ে গত মঙ্গলবার প্রথম দফার ভোটে হেরে যান বরিস জনসন। কেননা ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২১ জন এমপি বিরোধীদের ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছিলেন। তারপর সেসব এমপিকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন বরিস।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটিতে প্রথম দফা হারার পরদিনই আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব তুললে দ্বিতীয় দফার ভোটেও হেরে যান প্রধানমন্ত্রী বরিস। তারপর থেকে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে তার সরকার। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে চরম সঙ্কট তৈরি হয়েছে।