সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন করোনায় (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে তার মৃত্যু হয় (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি সিলেটে করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ডা. মঈন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন ডা. মইন। গত ৫ এপ্রিল তার করোনা পজেটিভ আসে। অবস্থার অবনতি ঘটলে ৭ এপ্রিল তাকে সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে রাখা হয়। সেখান থেকে পরে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
করোনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর চিকিৎসকের পরিবারসহ নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
মৃত্যুকালে দুই শিশুসন্তান ও স্ত্রীকে রেখে গেছেন ডা. মঈন।
৫ এপ্রিল ওই চিকিৎসকের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল। তাকে ওইদিন রাতেই শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
চিকিৎসক মঈন নিয়মিত প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন এবং ওসমানী হাসপাতালেও ডিউটি করেছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়লে অন্যান্য চিকিৎসক ও রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে তার বাসা নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন করে পুলিশ।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল নিজ হাসপাতালের আইসিইউতে বেড না পাওয়ায় আলোচনায় আসেন এই চিকিৎসক। কারণ, সেখানে করোনা আক্রান্তদের জন্য কোনো স্বতন্ত্র আইসিইউ ছিল না।
সহকর্মীরা জানান, করোনা ধরা পড়ার পর থেকেই বাড়িতে ছিলেন তিনি। ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরদিন দুপুরের দিকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এজন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।
সিলেট মেডিকেলে তার আইসিইউ এবং বেড না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার পরিবার ও সহকর্মীরা। আক্রান্ত চিকিৎসকের এক স্বজন (যিনি নিজেও চিকিৎসক) জানান, দীর্ঘদিন বাসায় রেখে আক্রান্তকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তার আইসিইউর প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটি সিলেটে সম্ভব হয়নি।