মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সংশোধিত করা নতুন চারটি বই এখনো পৌঁছায়নি শিক্ষার্থীদের হতে। অসঙ্গতি, বিতর্কিত তথ্য ও নানা ভুল-ভ্রান্তি ধরা পড়ায় সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির চারটি বইয়ে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব পলিত হলেও এখনো এই চারটি বইয়ের ছাপার কাজ শেষ হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের (ইফাবা) সুপারিশমতে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির আকায়েদ ওয়াল ফিক্হ, নবম ও দশম শ্রেণির কুরআন মজিদ ও তাজবিদ এবং আল হাদিস বই সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংশোধনের পর এই বইগুলো নতুন করে ছেপে জেলা-উপজেলায় পাঠানোর কথা ছিল।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ‘গত সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাদরাসার সব বই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর কথা ছিল। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অন্য বইগুলো সারাদেশে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হলেও সংশোধিত ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৬টি বইয়ের ছাপার কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে এখনো অনেক জেলা-উপজেলায় এসব বই পাঠানো হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, এই চারটি বই ছাপাতে সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর দেশের সব জেলা ও উপজেলা থেকে সংশোধনের জন্য এই চারটি বই ফেরত আনতে আরও খরচ হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। এতে করে সরকারের মোট গচ্চা গেছে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পাঠ্যবইয়ে ইসলাম অবমাননাকর, বিতর্কিত তথ্যসহ নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে ইফাবা। এরপর তা পরিবর্তনে ইফাবার পক্ষ থেকে লিখিতভাবে ১৫টি স্থানে সংশোধন করতে সুপারিশ করা হয়। বিষয়টি বিশ্লেষণ করে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির আকায়েদ ওয়াল ফিক্হ, নবম ও দশম শ্রেণির কুরআন মজিদ ও তাজভিদ এবং আল হাদিস বইগুলো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইফাবার মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল বলেন, ‘ভুলত্রুটি হতেই পারে, সরকার এটা সেটা সংশোধন করছে ভালো কথা। তবে বইগুলো এখনো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে না দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির বই বিতরণ নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের বিলম্বের কারণে চারটি বই এখনো সারাদেশে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, বইগুলোর মধ্যে কিছু পরিবর্তন করে নতুন করে ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে আমরা সংশোধিত বইগুলোর সিডি পাই। এরপর তা ৫৫টি প্রেসে পাঠানো হয়। ছাপার কাজের জন্য প্রেস মালিকদের মাত্র ১৪ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে অনেকে বই প্রস্তুতের কাজ শেষ করতে পারেনি। এ কারণে বই পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের বইগুলো সব জেলায় পৌঁছে যাবে বলে আশা করি।
বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্যাহ বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। যারা বইগুলোর লেখক, সম্পাদক তারা ন্যাশনাল কারিকুলাম কোঅরডিনেশন কমিটির অনুমোদন নিয়ে বই রচনা করে এনসিটিবিতে যান। এনসিটিবির সকল লোক এর সঙ্গে জড়িত আছেন। এই বইগুলো এনসিটিবি পরিমার্জন করে তবেই মুদ্রণে দেয়। ফলে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে এনসিটিবিই ভালো বলতে পারবে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন,‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, মাদরাসার সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির মোট চারটি পাঠ্যবই সংশোধন করে আবার ছেপে দিতে হবে। আমরা সেই কাজটিই করেছি। এর বাইরে আমাদের আর কিছু জানা নেই। দ্রুত এসব বই সব উপজেলা-থানায় পৌঁছে দেয়া হবে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com