বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপনাদের মধ্যেও কে কোথায় আছে, কে রাঘববোয়াল, কে চুনোপুঁটি, তা খোঁজা হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে বিএনপির কারা জড়িত, তা খোঁজা হচ্ছে। কেউ ছাড় পাবে না।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জামান। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, পরিবেশবিদ আতিক রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাফিজা খাতুন, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ঢাকা উত্তর সিটির কমিটির বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেখলাম। পত্রিকার রিপোর্টে আছে, এর মধ্যে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী এ কমিটিতে। তাই আপনারাই তো স্বীকার করলেন, সদ্যঘোষিত কমিটিতে মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসায়ী আছে। আর কোথায় কোথায় আছে তা খোঁজা হচ্ছে।
ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না এলে তাদের জন্য কেউ অপেক্ষা করবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়েছে নিয়ম অনুযায়ী। এখন বিএনপি না এলে সময় স্রোত তো অপেক্ষা করবে না। সংবিধান ও গণতন্ত্র কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। ৫ জানুয়ারির ভুলের পুনরাবৃত্তি হলে ভুলের মাসুল বিএনপিকেই দিতে হবে। আর বিএনপি না এলেও বাকি সব নিবন্ধিত দলই আসবে। নিবন্ধিত দল তো ৩৭টি আছে। একটা গেলে আরও ৩৬টা থাকবে। কোনও অসুবিধা আছে?
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন হাইকোর্টে হলো, আপিল বিভাগেও হলো। তখন কি সরকার হস্তক্ষেপ করেছে? এখন যখন জামিনের আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে তখন তারা তা মেনে নিতে পারছেন না। তারা আদালত মানেন না।
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতদের ঘটনায় তদন্তের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দাবির বিষয়ে কাদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের বন্ধু, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। তারা চাইতেই পারে। কিন্তু এখানে আমরা নিজেরাই তদন্ত করছি। কক্সবাজারের একরামের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। যেটা যেটা অভিযোগ আসছে, সেই বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকারই তদন্তের বিষয়ে যথেষ্ট। অন্য কারো মাথা ঘামানোর দরকার নেই।
শেখ হাসিনা অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেন না। তিনি বারবার বলেছেন, এ অভিযানে যদি কোনও নিরীহ মানুষ টার্গেট হয়, যারা দোষী তারা রেহাই পাবে না। তাদেরও বিচার হবে। আমরা আঁটঘাট বেঁধে নেমেছি।
কাদের বলেন, দেশের পরিবেশ যে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে তা নিয়ে রাজনীতিবিদরা কোনও কথা বলছেন না। তারা দূষণ, ভেজাল, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেন না। সবাই তত্ত্ব কথা বলেন, রাজনীতির নানা তত্ত্ব দিয়ে বেড়াচ্ছে সরকার খারাপ, দেশ খারাপ। দেশ আজকে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে, পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হয়েছে এর কোনও সুনাম নেই।
খালেদা জিয়ার জামিন হাইকোর্টে হলো, আপিল বিভাগেও হলো। তখন কি সরকার হস্তক্ষেপ করেছে? এখন যখন জামিনের আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে তখন তারা তা মেনে নিতে পারছে না। তারা আদালত মানে না।
চার বছর আগে বিএনপি-জামায়াতের বর্জনের মুখে ১৫৩ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। ক্ষমতাসীন জোট বা সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় নেতারা সেসব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। তবে এবার আর সে ‘ফাঁদে’ ফেলার ‘খোয়াব’ দেখে লাভ হবে না বলে বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন কাদের।