আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে বিএনপি এত চিৎকার করছে কেন? তাদেরও বহু লোক জড়িত, তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপিকে আমি জিজ্ঞেস করব, প্রধানমন্ত্রীর এই সরকারের আমলে সাড়ে নয় বছরের মধ্যে আপনারা কি কোনো রাজনৈতিক সভায় মাদকের বিরুদ্ধে একটি কথা বলেছেন?’ তিনি বলেন, বিএনপি গালিগালাজ ছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একটি কথা বলেছে? একটি শব্দও বিএনপি উচ্চারণ করেনি। কাজেই এ ব্যাপারে বিএনপির কথা বলার কোনো অধিকার নেই।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি দাবি করে বলতে পারি, বাংলাদেশের মানুষ এই অভিযানে খুশি। জনগণ কেন এই অভিযানে খুশি, এর জন্য তাদের (বিএনপি) গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। বিএনপির এখানে গায়ের জ্বালা।’ কাদের আরও বলেন, ‘আজকে মাদকের যে ভয়ংকর অবস্থা এসেছে, সকলে মিলে যদি আমরা সব দল সোচ্চার থাকতাম, তাহলে এই ভয়ংকর অবস্থা আসত না। আজকে পুলিশকে মোকাবিলা করতে হতো না। আজকে অভিযান কেন হচ্ছে, জনস্বার্থে করা হচ্ছে, একটা ভয়ংকর অবস্থার অবসানের জন্য।’
কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আবদুর রহমান বদি কেন? আরও প্রভাবশালী কেউ যদি সরকারি দলের হন, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। যে তালিকাগুলো পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এমপিদের নামও পাওয়া যাচ্ছে। নাম আসেনি, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার নির্দেশ, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের অবশ্যই এই অভিযানের আওতায় আনতে হবে।
আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকার পরও ধরা হচ্ছে না কেন, এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘প্রমাণ করতে হবে, প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে ধরা যায় না। একজন এমপিকে চট করে ধরা যায় না। প্রমাণিত হলে তিনি যদি অপরাধী হন, অবশ্যই তাঁর শাস্তি হবে।’
সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে—বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না, এটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট আছে, তাদের সন্ত্রাসী আছে। তাদের সঙ্গে অস্ত্রধারী আছে। যখন পুলিশ তাদের ধরতে যায়, তখন অস্ত্র নিয়ে মোকাবিলা করে, এনকাউন্টার হয়। এনকাউন্টার তো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নয়। যারা ধরতে যাবে, তাদের অস্ত্র নিয়ে মোকাবিলা করছে। তাহলে পুলিশ কি ওখানে গান গাইবে? তারা এনকাউন্টার করবে না?’
বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মোট ১ হাজার ২১৭টি মামলা হয়েছে। এসব অভিযানে মোট ৩১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দালাল হিসেবে ২৭ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি ২৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৫২টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।