মাঠে কাজ করা ও ফসল ফলানো গৌরবের বিষয়: প্রধানমন্ত্রী

:
: ১ বছর আগে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। মাঠে কাজ করা ও ফসল ফলানো গৌরবের বিষয়। সেভাবে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই সরকারের লক্ষ্য।’

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকটা পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। যেন তৃনমূল মানুষ উন্নত জীবন পায়। আমরা মোবাইল ফোন সবার হাতে পৌঁছে দিয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে, সেটাই আমরা চাই।’

আগামী রমজানে এক কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে, আমরা এক কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দিয়ে আসছি। এছাড়া নিম্নবিত্ত ৫০ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল দেওয়া হচ্ছে। ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। পরে আমরা ক্ষমতায় এসে কৃষি প্রণোদনার ব্যবস্থা করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন সংসদে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘোষণা দিয়েছিলাম, সে সময়ের বিরোধী দলের নেতারা এর বিরোধিতা করে বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। এতে বিদেশীদের সাহায্য পাওয়া যাবে না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ কি সারা জীবন বিদেশিদের কাছে ভিক্ষা করে চলবে। স্বাধীনতার পরে বিদেশি কয়েকজন সাংবাদিক জাতির পিতাকে প্রশ্ন করেছিলেন, রিজার্ভ নেই, কীভাবে এই দেশে চালাবেন। বঙ্গবন্ধু তখন বলেছিলেন, আমার দেশে মাটি আছে, আমার মানুষ আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উচ্চফলনশীল বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে নিবিড় গবেষণায় নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রাকৃতিক বৈরী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে৷’

তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির আমলে সার দাবি করায় ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের অপরাধ ছিল তারা সারের দাবি করেছিল। বিদ্যুতের দাবি করায় ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলন করতে গেলে ১৭ জন শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তখন থেকে আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল কৃষককে সারের পেছনে ছুটতে হবে না। সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। ২০০৯ সালের ক্ষমতার পর আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।’

এর আগে, সকাল ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর অবস্থিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, ফিলিপাইনের ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিচার্স ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল ড. জেইন বালিই, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।