মাঝ নদীতে চলছিল ইঞ্জিনচালিত নৌকা। সেসময় হঠাৎ মাথা ঘুরে নৌকায় পড়ে মারা যান মাঝি। তখনো চলছিল ইঞ্জিন। নৌকায় অন্য কেউ না থাকায় হাল ধরাও সম্ভব হয়নি। ফলে মাঝির মৃত্যুর সময় নদীতে ঘুরপাক খাচ্ছিল নৌকাটি।
এমন করুণ ঘটনার সাক্ষী হলো চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাঝ নদীতে খালি নৌকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাঝি পেয়ার আহমদ।
শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুর একটার দিকে জুলধা এলাকার বাসিন্দা যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম হৃদয় তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভুক্তভোগী পেয়ার আহমদ কর্ণফুলী থানার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ইছানগর গ্রামের বাদশা ফকিরের বাড়ির শাইর আহমদের ছেলে।
যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম হৃদয় তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ‘সাম্পানের ইঞ্জিন রয়েছে সচল, অচল হয়ে গেছে মাঝির ইঞ্জিন’ শিরোনামে পোস্ট করা ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ইঞ্জিনচালিত একটি খালি নৌকা মাঝ নদীতে ঘুরপাক খাচ্ছে। এসময় অন্য একটি নৌকা পেয়ার আহমদের নৌকাটিকে আটকানোর চেষ্টা করে। পরে যোগ দেয় আরও একটি নৌকা। নৌকা দুটি পেয়ার আহমদের নৌকাটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তীরে টেনে আনে।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান দয়াল শুক্রবার বিকেলে জাগো নিউজকে বলেন, ‘পেয়ার আহমদ ব্রিজঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী পারাপার করতেন। এস আলম চিনিকলের বর্জ্যে মাঝ নদীতেও মাছ ভেসে উঠছিল। বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পেয়ার আহমদ মাঝ নদীতে মাছ ধরতে যান। কিন্তু মাঝ নদীতে গিয়েই মাথা ঘুরে নৌকায় পড়ে যান পেয়ার। তবে ইঞ্জিন চালু থাকায় সেসময় নৌকাটি চক্রাকারে ঘুরছিল। পরে আমাদের অন্য দুটি নৌকা গিয়ে তার নৌকাটি তীরে নিয়ে আসে এবং পেয়ার আহমদকে উদ্ধার করে। অচেতন অবস্থায় পেয়ার আহমদকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি মৃত ঘোষণা করেন।’
লোকমান দয়াল বলেন, ‘পেয়ার আহমদের বয়স আনুমানিক ৪২ বছর। তার তিন মেয়ে এক ছেলে আছে। কর্ণফুলী নদীতে সাম্পানে যাত্রী পারাপার করে সংসার চালাতেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।’