একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলমান সংলাপ প্রসঙ্গে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আলোচনার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। একবার আলোচনা করলাম আর সব দাবি আদায় করে নিয়ে এলাম, তা তো ঠিক না। সংবিধানকে কেন্দ্র করে মন খুলে আলোচনা করলে সমাধান সম্ভব। জনগণের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে লক্ষ্য ঠিক করলে সবকিছু করা যায়।’
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর আরামবাগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত সংবিধান এখনও আছে। সেখানে জাতীয় চার নেতার স্বাক্ষরও আছে। সেই সংবিধানে সব সমাধান আছে। তার আলোকে সমাধান দাবি করবো।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করলে এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন কি-না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা এই দাবি করে আসছি। পরিবেশ সৃষ্টি করলে যে কোনো সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে পারে।’
সরকারের উদ্দেশ্যে ড. কামাল বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুন। এটা সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের গুরুদায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন জ্বালাও-পোড়াওয়ের আন্দোলন নয়। মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলেছি। স্বাধীনতার স্বপ্নের ওপর এই ঐক্য হয়েছে। ঐক্যের শক্তির সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। আক্রমণের মুখে জনগণের ঐক্যের শক্তি নষ্ট করা যায় না। বরং আদর্শ থাকলে ঐক্য শক্ত করে ধরে রাখা যায়। এটা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা তাদের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন। জেলহত্যা ছিল জঘন্য আক্রমণ। চার নেতাকে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ভেবেছিল দেশ টিকবে না; কিন্তু তাদের ধারণা ভুল হয়েছে। দেশ টিকে আছে।’
দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার সংকল্প ব্যক্ত করে ড. কামাল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছরে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অগ্রগতি হয়েছে এটা অনস্বীকার্য। তবে উন্নয়নের সুষম বণ্টন হচ্ছে না। ধনী-দরিদ্র বৈষম্য বাড়ছে। দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকার বিনিময়ে এমপি মনোনয়ন দেওয়া হয়।’
সভাপতির বক্তব্যে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘আমরা এখন হীরক রাজার দেশে বাস করছি। গণতন্ত্রের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এ সংগ্রামে ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঐক্যে এসেছে। আলোচনা শুরু হয়েছে। বল এখন প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে। জনগণ দেখতে চায় তাদের যে অধিকার বঙ্গবন্ধু সংবিধানের মাধ্যমে দিয়ে গেছেন, সে অধিকার পূরণ হয় কি-না।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মফিজুল ইসলাম খান কামাল প্রমুখ।