মঠবাড়িয়ায় মুসলিম নারীকে বিয়ে চিকিৎসক গ্রেপ্তার, মামলা প্রত্যাহারের হুমকি

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুসলমান হওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ড স্বামী মৃদুল মিত্র।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা মৈত্রি মিত্র (পূর্বের নাম হাফিজা আক্তার) বাদি হয়ে পাষন্ড স্বামী মৃদুল মিত্র সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ গত রোববার মৃদুল মিত্রকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে অন্যান্য আসামীরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা ওই নারী। মৃদুল মিত্র উপজেলার সাপলেজা বাজারের দন্ত চিকিৎসক ও  আমড়াগাছিয়া গ্রামের সুখরঞ্জন মিত্রের ছেলে।
জানাগেছে, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিলবুনিয়া গ্রামের হাচান আলী শেখ এর কন্যা হাফিজা আক্তার ২০১৪ সালে মঠবাড়িয়ার সাপলেজায় বেসরকারি সংস্থা উদ্দীপনে চাকুরী নেন। এরপর মধ্য আমড়াগাছিয়া গ্রামের সুখরঞ্জনের ছেলে মৃদুল মিত্রের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মৃদুল মুসলমান হওয়ার আশ্বাসে হাফিজাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং সুকৌশলে ভারতে নিয়ে চলে যায়। লম্পট মৃদুল নিজে পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে গেলেও হাফিজাকে অবৈধভাবে প্রবেশ করায়।
পরে মৃদুল হাফিজাকে ভারতে রেখে দেশে চলে আসে এবং মাঝে মধ্যে ভারতে গিয়ে হাফিজাকে বিয়ে না করেই তার সাথে অবৈধভাবে জীবন যাপন করত। হাফিজা দেশে আসতে চাইলে পুলিশের ভয়ভীতি দেখাত মৃদুল।
এদিকে হাফিজার ছোট ভাই সবুজ শেখ বাদী পিরোজপুর সদর থানায় মৃদুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মৃদুল কারাগারে গেলে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তার স্বজনরা হাফিজাকে খবর দিয়ে দেশে আনে এবং আদালতে হাজিরে করে মৃদুলকে জামিনে মুক্ত করেন।
জেল থেকে মুক্ত হয়ে মৃদুল আদালতের মাধ্যমে হাফিজার নাম পরিবর্তন করে মৈত্রি মিত্র রেখে বিয়ে করেন। পুনরায় গত ৮ মার্চ মঙ্গলবার নির্যাতনের একপর্যায়ে অন্তঃস্বত্বা ওই গৃহবধূ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিলে ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল জানান, মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।