আমাদের বাঙ্গালিদের ভর্তা প্রেম সব জায়গায় জনপ্রিয়। এক প্লেট গরম গরম ঝরঝরে সাদা ভাত, এক বাটি ডাল আর যে কোন এক রকমের ভর্তা। এই তিনটি জিনিস হলে বাঙ্গালিদের আর কিছুই যেন খাবার টেবিলে দরকার হয় না। এই দিয়েই চেটে পুটে খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট। আর এই জন্যেই আমরা বাঙ্গালিরা নানা ভাবে বিভিন্ন সবজি দিয়ে ভররাতা বানাবার চেষ্টা করে থাকি। ট্রাডিশনাল ভাবে বানানো ভর্তার রেসিপি গুলো তো সব সময়ই জনপ্রিয়।
বেগুন ভর্তা কিভাবে করতে হয় তা আমরা সবাই কম বেশি জানি। সাধারণত আস্ত বেগুন পুড়িয়েই এটির ভর্তা বানানো হয়ে থাকে। আমাদের মা খালারা সব সময় এভাবেই বেগুন ভর্তা করে এসেছেন। কিন্তু আস্ত বেগুন পোড়ানো কিন্তু বেশ কষ্টকর একটা ব্যাপার। সেই সাথে ধৈর্যের ব্যাপারও বটে। কারণ বেগুণ পোড়াতে যথেষ্ঠ সময় লাগে। আর এই পুরোটা সময় চুলার পাশে দাঁড়িয়ে বেগুন ওলট পালোট করে পোড়াতে হয়।
য়ার একটা ব্যাপার আছে। সেটি হচ্ছে কাঠের চুলার আগুনে বেগুন পোড়ালে যে টেস্টটা আসে সেটা গ্যাসের চুলার আগুনে বেগুন পোড়ালে সেই ভাবে আসেনা। কিন্তু তাই বলে আমরা যারা শহরে থাকি আর গ্যাসের চুলা ব্যবহার করি তারা কি বেগুন ভর্তা খাব না? অবশ্যই খাবো। তবে একটু অন্য ভাবে।
আজ আমি এই অন্য ভাবে বেগুন ভর্তা করার রেসিপিটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। চলুন তাহলে দেরি না করে চটপট জেনে নেই এই ডিম বেগুন ভর্তা বানানোর জন্য আমাদের কি কি উপকরণ এর প্রয়োজন হবে। সেই সাথে এই ভর্তা বানানোর পুরো প্রসেস্টাও জেনে নেই চলুন।
ডিম ও বেগুন ভর্তা বানাতে যে যে উপকরণ দরকার হবে: বেগুন ১টা; ডিম ১টা; মিহি করে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ ২ টেবিল চামচ; মিহি করে কুচি করে রাখা রসুন ১ টেবিল চামচ; হলুদ গুড়া ১/২ চা চামচ
লাল মরিচ গুড়া ১ চা চামচ; লবণ পরিমান মত; চিনি ১/৪ চা চামচ; আস্ত কাঁচা মরিচ ৫ থেকে ৬টি
মিহি করে কুচি করে রাখা ধনে পাতা ১ টেবিল চামচ; লেবুর রস ১ চা চামচ; কালো গোল মরিচ গুড়া ১/৪ চা চামচ; সয়াবিন তেল ২ টেবিল চামচ; সরষের তেল ২ চা চামচ; আস্ত শুকনা মরিচ ১টি কিংবা ২টি; তেজপাতা ১টি।
ডিম ও বেগুণ ভর্তা যে প্রক্রিয়াতে বানাতে হবে:
১ম ধাপ: প্রথএ ডীম সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করে নেয়া ডিমটি খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। এরপর একটা গ্রেটারে সিদ্ধ ডিমটি গ্রেট করে নিতে হবে। গ্রেটারের একদম মিহি অংশ দিয়ে ডিম গ্রেট করবেন না। তাহলে একদমই ভর্তা হয়ে যাবে ডিমটি। তখন আর খাওয়ার সময় গালে ডিম বাধবে না। এজন্য গ্রেটারের একটু বড় যেই গ্রেট করার অংশটি থাকে সেটি দিয়ে ডিমটি গ্রেট করে নিতে হবে। এতে করে ডিম ও বেগুন ভর্তা খাবার সময় গালে অল্প অল্প করে ডিমের অংশ পড়বে। খেতে সুস্বাদু লাগবে।
২য় ধাপ: বেগুনটি গোল গোল চাক চাক করে কেটে নিতে হবে প্রথমে। এরপর বেগুনের টুকরো গুলোয় হলুদ গুড়া, লাল মরিচ গুড়া আর পরিমাণ মত লবণ মেকে নিতে হবে। একটা লাহার তাওয়াতে অল্প করে সয়াবিন তেল দিতে হবে। এবার এই তেলে বেগুনের টুকরো গুলো ভাজতে দিতে হবে। চুলার জ্বাল মিডিয়াম করে রাখতে হবে। বেশ কিছুক্ষণ ভাজার পর যখন বেগুনের টুকরো গুলোর এক পিঠ ভাজা হয়ে যাবে তখন এগুলো উলটে দিতে হবে। একই ভাবে বেগুনের টুকরো গুলোর অপর পিঠও ভেজে নিতে হবে।
বেগুনের টুকরো গুলো লোহার তাওয়াতে ভাজার একটা কারণ আছে। মিডিয়াম আঁচে অল্প তেলে লোহার তাওয়াতে বেগুনের টুকরা গুলো ভাজার কারণে এগুলোতে একটু পোড়া পোড়া ভাব আসবে। এতে করে ভর্তা করার পর বেগুন পোড়ার টেস্টটা পাওয়া যাবে।
বেগুনের টুকরো গুলোর দুই পাশ হালকা পোড়া পোড়া ভাব সহ ভাজা হয়ে গেলে একটা প্লেটে নামিয়ে নিতে হবে। এরপর এই গুলো একটু ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ভেজে রাখা বেগুনের টুকরো গুলো একটু ঠান্ডা হয়ে গেলে এগুলো হাত দিয়ে বর্তা করে নিতে হবে। অনেকে বেগুনের খোসা একেবারেই পছন্দ করেন না। আপনি কিংবা আপনার বাসার কোন সদস্য যদি এই দলের হয়ে থাকেন তবে ভর্তা করার সময় ভাজা বেগুনের টুকরো গুলো থেকে হাত দিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে পারবেন।
৩য় ধাপ: আস্ত কাঁচা মরিচ গুলো পুড়িয়ে নিতে হবে। এরপর এই পোড়ানো কাঁচা মরিচ গুলো শীল পাটায় মিহি করে বেটে নিতে হবে। পোড়া কাঁচা মরিচ বাটা থেকে খুব সুন্দর একটা টেস্ট আসে যেটা যে কোন রকম ভর্তার সাথে খুব ভাল যায়।
৪র্থ ধাপ: এই বার একটা ফ্রাইং প্যান চুলায় বসাতে হবে। চুলা জ্বালিয়ে এই ফ্রাইং প্যানে ২ চা চামচ সরষের তেল গরম করতে দিতে হবে। সরষের তেল গরম হয়ে গেলে এতে একটা তেজপাতা ও দুটা শুকনা মরিচ ফোড়ন দিতে হবে। আপনি যদি ঝাল খুব একটা পছন্দ না করেন তবে একটি শুকনা মরিচ ফোড়ন দিলেও চলবে।
সরষের তেল থেকে যখন মশলা ফোড়নের সুন্দর একটা গন্ধ বের হবে তখন এর মধ্যে মিহি করে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিতে হবে। পেঁয়াজ কুচি একটু নরম হয়ে আসলে এর মধ্যে মিহি করে কুচি করে রাখা রসুন দিয়ে দিতে হবে।
মিডিয়াম আঁচে নেড়ে চেড়ে মশলা দুটো ভেজে নিতে হবে। যখন পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচি ভাজা ভাজা হয়ে একদম গোল্ডেন ব্রাউন কালার হয়ে যাবে তখন এর মধ্যে আগে থেকে ভেজে নিয়ে ভর্তা করে রাখা বেগুন দিয়ে দিতে হবে। যদিও বেগুন ভাজার সময় লবণ দেয়া হয়েছে। তার পরেও এই সময়ে অল্প একটু লবণ যোগ করতে পারেন। কারণ এই ভর্তার মধ্যে ডিম যোগ করা হবে। তাই আর একটু লবণ যোগ কররলে ভাল হয়। তা না হলে ডিম বেগুন ভর্তা খাওয়ার সময় আনলি লাগতে পারে।
৫ম ধাপ: এর পরে বেগুনের মধ্যে বেটে রাখা পোড়ানো কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে হবে। সিদ্ধ করে গ্রেট করে রাখা ডিমও এই সময়ে দিয়ে দিতে হবে। ভাল করে নেড়ে চেড়ে মিশিয়ে নিতে হবে। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ ডিম ও বেগুন ভর্তার মিশ্রণ তেলে ভাজতে হবে। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে ভর্তার মিশ্রণ থেকে তেল ছেড়ে দেওয়া শুরু করেছে। এই সময়ে উপর থেকে মিহি করে কুচি করে রাখা ধনে পাতা ও কালো গোল মরিচ গুড়া ছড়িয়ে দিতে হবে। আরো দুই থেকে তিন মিনিট এই মিশ্রণটি ভাজতে থাকতে হবে।
তারপর চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। চুলা বন্ধ করে দেবার পর উপর থেকে একটু লেবুর রস ছড়িয়ে দিতে হবে। খুনতি দিয়ে নেরে চেড়ে ভাল করে সব উপকরণের সাথে লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে। দুই থেকে তিন মিনিট এই অবস্থায় ফ্রাইং প্যান ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এরপর একটা সার্ভিং বোলে সার্ভ করতে হবে ভীষণ মজার ডিম ও বেগুন ভর্তা।
সকলের যে খাবারটি সব চেয়ে বেশি ভাল লাগে সেটি হচ্ছে সাদা ভাত, ডাল আর বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু ভর্তা। তাইতো আজ নিয়ে এলাম আমার নিজস্ব কিছু ভর্তার রেসিপি। জানি রেসিপি গুলো অনেকেই জানেন। কিন্তু রেসিপি গুলো পোস্ট করলাম যারা জানেন না তাদের জন্য।
১. আলু ভর্তা: উপকরণঃ ৩টা বড় সাইজের আলু, শুকনা মরিচ ২ টা মাঝারি, পেঁয়াজ ১ টা কুঁচানো, সরিষার তেল ও লবন আন্দাজমতো।
প্রস্তুত প্রণালীঃ আলু ভাল করে ধুয়ে ৪ ভাগ করে নিয়ে পানি সহকারে সসপ্যানে করে চুলায় দিন। সিদ্ধ হলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচ অল্প তেলে ভাজুন। পেঁয়াজ বাদামী রং হলে নামিয়ে নিন। এবার আলুর খোসা ছাড়িয়ে পিষনিতে পরিমানমতো লবন ও সরিষার তেল, পেঁয়াজ, মরিচ দিয়ে মিহি করে পিষুন। ভর্তা হয়ে গেলে হাতে নিয়ে ছোট ছোট ৬ টা গোল বল করে বাটিতে করে পরিবেশন করুন।
২. আলু ডিম ভর্তা: উপকরণঃ ডিম ২ টা, ১ টা মাঝারি সাইজের আলু, ১ টা কাঁচামরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ চা চামচ, লবন পরিমানমতো।
প্রস্তুত প্রণালীঃ আলু ও ডিম সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে আলাদা ভাবে চটকে নিন। এবার পেঁয়াজকুচি, কাচামরিচ কুচি, আধা চা চামচ সরিষার তেল ও লবন দিয়ে ভালোভাবে মেখে ভর্তা তৈরী করুন।
৩.শিম-আলু-বেগুন ভর্তাঃ উপকরণঃ শিম ৮/১০টি, ১টা মাঝারি সাইজের বেগুন, ৪টা মাঝারি সাইজের আলু, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ৩/৪ টা শুকনা মরিচ, সরিষার তেল ১ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ চা চামচ ও পরিমানমতো লবন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ শিম ও বেগুন একসাথে ও আলু আলাদা সিদ্ধ করুন। আলু ও বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে শিমসহ চটকে নিন। পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচ অল্প তেলে ভাজুন। এবার সব উপকরণ একসাথে করে পিষনিতে ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
৪. মিষ্টি কুমড়া ভর্তাঃ উপকরণঃ মিষ্টি কুমড়া ২ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, পানি ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, পিঁয়াজ কুচি ৪/১ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ মিষ্টি কুমড়া খোসা ছাড়িয়ে কেটে ধুয়ে পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। এবার পিঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি প্লেটে নিন। এবার সমস্ত মসলা হাত দিয়ে মেখে মিষ্টি কুমড়া মাখিয়ে নিন। হয়ে গেল মজাদার মিষ্টি কুমড়া ভর্তা।
৫. লাউপাতার ভর্তাঃ উপকরণঃ কচি লাউপাতা ১৫/২০টি, পেঁয়াজ বাটা ১/৩ কাপ, কাঁচামরিচ বাটা ২ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা ২ চা চামচ, সরষে বাটা ২ চা চামচ, সরষের তেল সামান্য, হলুদ গুঁড়া সিকি চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি সিকি কাপ, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচামরিচ কুচি সামান্য।
প্রস্তুত প্রণালীঃ লাউপাতা ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কয়েকটি পাতা বিছিয়ে রাখতে হবে। এবার ওপরের সব মসলা একটি বাটিতে মেখে বিছানো পাতাগুলোর মধ্যে রাখতে হবে এবং পাতা মুড়ে দিতে হবে। এর সঙ্গে বাকি পাতা দিয়ে মুড়ে সুতা দিয়ে বেঁধে দিতে হবে, যাতে মসলা বের না হয়। এবার বসা ভাতের মধ্যে মসলা মোড়ানো লাউপাতা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ভাত হয়ে গেলে ভাত থেকে মসলা মোড়ানো পাতা বের করে পাটায় বেটে বা হাত দিয়ে চটকে নিযে কাঁচা সরষের তেল দিয়ে ভর্তা তৈরি করতে হবে। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। এটি রাইস কুকারে করা যায়।
৬. টমেটো ভর্তাঃ উপকরণঃ টমেটো আধা কেজি, কাঁচামরিচ ৫/৬টি, লবণ পরিমাণমতো, পিঁয়াজ কুচি সিকি কাপ, ধনেপাতা কুচি সিকি কাপ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ টমেটো ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে নিন। চুলায় ফ্রাই প্যানে টমেটোগুলো দিয়ে ঢেকে দিন অল্প আঁচে। ১০/১৫ মিনিট পর উঠিয়ে দিন। টমেটো সিদ্ধ হয়ে গেলে ফ্রাই প্যান থেকে নামিয়ে নিন। এবার টমেটোগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিন। পাত্রে পিঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি দিন। হাতে মেখে টমেটোগুলো তার সঙ্গে মিশিয়ে ভর্তা করে নিন। তৈরি হয়ে গেল চমৎকার টমেটো ভর্তা।
৭. তিল-বেগুনের ভর্তাঃ উপকরণঃ পোস্তদানা ও সরিষা ২ চা চামচ করে, তিল ১ টেবিল চামচ, নারিকেল কুরানো আধা কাপ, টমেটো ৫টি, বেগুন আধা কেজি, সয়াবিন তেল আধা কাপ, রসুন কুচি ২ চা চামচ, আদা বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচামরিচ ফালি ৩টি, শুকনা মরিচ ফালি ২টি, জিরা ১ চা চামচ, কারিপাতা ৭ থেকে ৮টি, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালীঃ পোস্তদানা, সরিষা ঝেড়ে বেছে পানিতে কিছুণ ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে নিন। তিল হালকা টেলে নিন। পোস্তদানা, সরিষা, তিল ও নারিকেল একত্রে মিহি করে বেটে রাখুন। টমেটোর গায়ে একটা আঁচড় কেটে ফুটানো পানিতে দিন। ৩ থেকে ৪ মিনিট পরে খোসা ফেটে গেলে পানি থেকে তুলে খোসা ছাড়ান। ছুরি দিয়ে টমেটো কুচি করে রাখুন। বেগুনে দু-তিনটা আঁচড় কেটে বোঁটাসহ ঝলসে নিন। বোঁটা ধরে পানিতে কলের নিচে রেখে খোসা ছাড়িয়ে গোটা বেগুন ধুযে নিন।
বেগুনের আঁশ এবং শক্ত অংশ ফেলে চটকে নিন অথবা ব্লেন্ডারে মেশান। তেলে পেঁয়াজ আধা ভাজা হলে রসুন ও কাঁচামরিচ দিয়ে ভাজুন। আদা, পোস্তদানা, সরিষা, তিল, নারিকেল বাটা দিয়ে ১ মিনিট ভাজুন। টমেটো ও বেগুন দিয়ে অনবরত নেড়ে ভাজুন। হালুয়ার মতো দলা বাঁধলে কিছুণ ভেজে নামিয়ে নিন। ফ্রাইপ্যানে ২ চা চামচ তেল দিয়ে মরিচ, জিরা ও কারিপাতা ভেজে বেগুনের সঙ্গে মেশান।
৮. কাঁচা কলা ভর্তাঃ উপকরণঃ কাঁচাকলা ২ টা, পেঁয়াজ ১ টা কুচানো, কাঁচামরিচ ২ টা কুচানো, সরিষার তেল ও লবন আন্দাজমতো।
প্রস্তত প্রনালীঃ কাঁচাকলা ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে চাক চাক করে কেটে সিদ্ধ করুন। এবার সব উপকরণ একসাথে পিষনিতে পিষে নিন।
৯. কাঁঠালের বিচি চিংড়ি ভর্তাঃ উপকরণঃ কাঁঠালের বিচি ১ কাপ, চিংড়ি মাছ ১ কাপ, শুকনো মরিচ ৭-৮ টি, রসুন কোয়া ২টি, হলুদ আধা চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরষের তেল ২ টিবিল চামচ, পেঁয়াজ কুঁচি আধা কাপ।
প্রস্তত প্রণালীঃ কাঁঠালের বিচি ছিলে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। চিংড়ি মাছ বেছে পরিষ্কার করে হলুদ ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার বিচি খুব ভালো করে সিদ্ধ করতে হবে। অন্য একটি পাত্রে তেল দিয়ে শুকনো মরিচ ভেজে তুলে ঐ তেল রসুন-পেঁয়াজ দিয়ে নরম করে ভেজে চিংড়ি দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিতে হবে। এবার বিচি পাটায় বেটে নিয়ে চিংড়ি মাছ ছেঁচে আধা ভাঙা করে তেল-পেঁয়াজসহ সব একসঙ্গে মাখিয়ে ভর্তা তৈরি করতে হবে।
১০. সব্জি ভর্তাঃ উপকরণঃ সিম ৫-৬টা ( এখন যদি পাওয়া যায়), বরবটি ৫-৬টি, কাঁচা কলা ১ টি, কাঁচা মরিচ ৭-৮টি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন ৩-৪কোয়া, ধনেপাতা কুচি আধা কাপ, লবন পরিমানমতো, সরিষার তেল ১ টেবিল চামচ, যে কোন ২ টুকরো।
প্রস্তত প্রনালীঃ সব উপকরন অল্প পানি দিয়ে সেদ্ধ করে পানি শুকিয়ে ফেলতে হবে। সব উপকরন একসঙ্গে শিলপাটায় বেটে নিতে হবে। পরে পেয়াজ কুচি এবং সরষের তেল মেখে নিতে হবে।
১১. পুঁই ফুলের ভর্তাঃ উপকরণঃ পুঁই ফুল ১ কাপ, কাঁচামরিচ ২টি, রসুন ১ কোয়া, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, তেল ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তত প্রণালীঃ পুঁই ফূল ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে ওপরের সব উপকরণগুলো দিয়ে ভাজুন এবং মাঝেমধ্যে মৃদু আঁচে ঢেকে রাখুন। পুঁই ফুল সেদ্ধ হলে শিলপাটায় বেটে নিন পুঁই ফুলের ভর্তা।
১২. টাকি মাছ ভর্তাঃ উপকরণঃ ২৫০ গ্রাম টাকি মাছ, ২০০ গ্রাম পেঁয়াজ, ১৫-২০ টি কাঁচামরিচ, দুই ফালি রসুন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ হালকা তেলে মাছগুলো কড়াইয়ে ভাজুন। বাদামী কালার হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন। ঐ কড়াইয়ে পেঁয়াজ, রসুন, কাচামরিচ এক সাথে ভাজুন। ভালভাবে সিদ্ধ হইলে নামিয়ে ফেলুন। এখন মাছগুলো থেকে মাঝের কাটাটি সরিয়ে ফেলুন। তারপর সবকিছু একসাথে কচলিয়ে মেখে ফেলুন। পরিমানমত লবন দিয়ে আবার মাখুন। এখন সবকিছু ঐ কড়াইয়ে হালকা তেল দিয়ে হালকা করে ভাজুন। কেউ ধনিয়া পাতা পছন্দ করলে কিছু ধনিয়া পাতা দিয়েও ভাজতে পারেন অথবা লেবু পাতা দিতে পারেন।
১৩. চ্যাপা শুটকি ভর্তাঃ উপকরণঃ দুইটি বড় সাইজের চ্যাপা, দুইটি পেঁয়াজ, একটি রসুন, ১০-১২ টি কাঁচামরিচ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ অল্প একটু চুন দিয়ে ভাল ভাবে চ্যাপা দুইটি ধুয়ে নিন। পেঁয়াজ দুইটি একটু বড় বড় করে কুচি কুচি করে কাটুন। রসুনের খোসা ছাড়িয়ে এক একটি রসুনের ফালিকে লম্বাভাবে চার টুকরো করুন। এখন কড়াইয়ে চার ফোটা তেল দিয়ে চ্যাপা দুইটি হালকা ভাবে ভাজুন। ঐ কড়াইয়ে পেঁয়াজ, রসুন, কাচামরিচ এক সাথে ভাজুন। ভালভাবে সিদ্ধ হইলে নামিয়ে ফেলুন। এখন সবকিছু একসাথে পাটায় বেটে ফেলুন। শেষে পরিমান মত লবণ দিয়ে মাখিয়ে পরিবেশন করুন।
১৪. চিংড়ি ভর্তাঃ উপকরণঃ মাঝারি আকারে চিংড়ি ( মাথা ও খোলা বাদ দিয়ে ) ১ কাপ , পেয়াঁজ মোটা কুচি আধা কাপ , কাঁচামরিচ ৭-৮টা , লবণ পরিমাণ মতো , সরিষার তৈল ৩ টেবিল চামচ , রসুন ২-৩ কোয়া , হলুদ গুড়া সামান্য, গরম ভাত আধা কাপ।
প্রস্তত প্রনালীঃ চিংড়ি , সামান্য লবণ , সামন্য হলুদ গুড়া , রসুন, কাচামরিচ , ১ চা চামচ সরিষার তৈল ও অল্প পানি দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে । পানি শুকিয়ে গেলে গরম অবস্থায় চটকে নিতে হবে । ভাতও চটকে নিতে হবে । এবার পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ , সরিষার তৈল ও লবণ দিয়ে মেখে ভর্তা করতে হবে।