রাজধানী ঢাকাসহ দেশের মূল ভূখন্ডের সাথে প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ দ্বীপজেলা ভোলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইর কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের উপস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ভোলা-বরিশাল ব্রিজের সম্ভাব্যতা যাচাই (সার্ভে রিপোর্ট) উস্থাপন করা হয়। রিপোর্টে তিনটি পয়েন্টে ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব করা হলে ভেদুরিয়া-লাহারহাট পয়েন্টেটিতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য মতামত প্রদান করা হয়।
দ্বীপজেলা ভোলাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের সেতু ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলতি বছরের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে। এ লক্ষে গত বছর ভারতের স্টুপ, ইংল্যান্ডের কাউই এবং বাংলাদেশের ডিডিসি ও দেবকন কনসাল্টেন্ট নামের এই চারটি কোম্পানির যৌথ একটি পরামর্শক গ্রুপ ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইর কাজ শুরু করেছিল।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমার র্দীঘদিনের স্বপ্ন ছিলো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলার সাথে সড়ক পথে দেশের মূলভূখন্ডের যোগাযোগ স্থাপন করা। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণ হলে আর পদ্মা ব্রিজের কাজ শেষ হলে ভোলার মানুষ ৫ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় যেতে পারবে। তা ছাড়া ভোলায় প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতকি গ্যাসের ওপর ভিত্তি করে ব্যাপক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। এমন এক সময় আসবে যখন ভোলার টাকা দিয়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর মেঘনা ব্রিজও নির্মাণ করা হবে।
সেতু বিভাগ সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেছেন ভোলার ভেদুরিয়া থেকে লাহারহাট সাইটটিতে তুলনা মূলক কম খরচে ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব। এ সময় তিনি আরও বলেন যত দ্রুত জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হবে তত দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
কনসালটেন্ট গ্রুপ প্রধান নিরমাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রাথমিকভাবে ৩টি সাইটে (পয়েন্টে) ব্রিজটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। প্রথমটি হচ্ছে ভোলার ভেদুরিয়া ফ্রেরিঘাট থেকে লাহারহাট ফ্রেরিঘাট হয়ে বরিশাল। দ্বিতীয়টি ভোলার ভেলুমিয়া লঞ্চঘাট থেকে ধুলিয়া লঞ্চঘাট হয়ে বাউফল হয়ে পটুয়াখালি। ৩য়টি ভোলার গাজিরচর থেকে টুমচর হয়ে বরিশাল। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ প্রথম সাইটটিতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য মত দিয়েছেন।
ভেদুরিয়া ফ্রেরিঘাট থেকে লাহারহাট ফেরিঘাট এই সাইটটিতে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে লাহারহাট সংলঘœ আড়িয়ালখা নদীতে ৫শ মিটার, কালাবদর নদীতে ৩৪শ মিটার এবং ভোলা সংলঘœ তেতুলিয়া নদীতে ১২শ মিটার ব্রিজ এবং মাঝখানের চরে ৩৫শ মিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার মো: মোকতার হোসেন, জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল মমিন টুলু, উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন।