ভোলায় মসজিদের নাম পরিবর্তন নিয়ে দু’পক্ষের উত্তেজনা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলা সদর উপজেলা ৩নং পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে মসজিদের নাম পরিবর্তন নিয়ে কয়েকদিন যাবত দু’পক্ষের টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় পর্যায়ে এর সমাধান হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাও হয়নি। দু’পক্ষের উত্তেজনা থেকে যেকোনো সময় সংঘর্ষ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে মসজিদের সাধারণ মুসল্লীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকন্ঠা।

মসজিদের নাম পরিবর্তন নিয়ে দু’পক্ষের একটি পক্ষ হলো হারুন মাল অন্য একটি পক্ষ হলো রফিকুল ইসলাম মাষ্টার। যিনি বর্তমানে মসজিদটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম মাষ্টার জানান, ১৯৭৮ সালে তাঁর  মা আবেদা খাতুন তাদের বাড়ির দরজায় হাজী সেকান্দর আলী জামে মসজিদের নামে ২০ শতাংশ জমি দান করেন। এরপর পর্যাক্রমে স্থানীয় মুসল্লীরা ওই মসজিদের নামে অনেক জমি দান করেন।
এখন পর্যন্তু মুসল্লীদের দেওয়া ১২টি দলিল তাঁর কাছে (রফিকুল ইসলামের) সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিটি দলিল ও মসজিদের বিদ্যুৎ বিলের কাগজপত্রে মসজিদটির নাম হাজী সেকান্দর আলী জামে মসজিদ নাম রয়েছে।
তিনি দাবি করছেন, সম্প্রতি হারুন মাল বাড়ির লোকজন মসজিদটির নাম তরুমল্লা মাল বাড়ি জামে মসজিদ নামে নামকরণ করার চেষ্টা চালায়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন গত ২২ জুলাই শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
রফিকুল ইসলাম মাষ্টার আরও দাবি করছেন, এ নিয়ে তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানিকর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালায়। যাঁর কারনে তিনি সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি তাঁর বাড়ির দরজা পাকা করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে একটি বরাদ্দ আসে। সেই বরাদ্দের টাকা দিয়ে তিনি তাঁর বাড়ির দরজা পাকা করেন।
কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন দাবি করছে ওই বরাদ্দকৃত রাস্তাটি মসজিদের নামে এসেছে। এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে এলজিইডি থেকে বরাদ্দ আসা রাস্তাটির কাগজপত্রও প্রদর্শন করেন।
তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানিকর অপপ্রচার চালাচ্ছে। খুব শিগগিরই তিনি তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অন্যদিকে তরুমল্লা মাল বাড়ি জামে মসজিদ নামে নামকরণ করার চেষ্টা যাঁরা চালাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, পূর্বে ওই মসজিদটি মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ছিলো। সেসময় মসজিদটির নাম তরুমল্লা মাল বাড়ি জামে মসজিদ নামে ছিল। নদী ভাঙনের পর মসজিদটি বর্তমান স্থানে নিয়ে আসা হয়। এরপর মসজিদটির নতুন নাম দেয়া হয় হাজী সেকান্দর আলী জামে মসজিদ নামে। যাঁর কারনে দু’পক্ষের এ উত্তেজনা।
এ বিষয়ে ৩নং পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম জহির জানান, এ ঘটনায় তিনি উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখেছেন৷ রফিকুল ইসলাম মাষ্টার যে দলিল দেখিয়েছেন সেখানে মসজিদটির নাম হাজী সেকান্দর আলী জামে মসজিদ নাম রয়েছে।
অন্যদিকে তাঁর প্রতিপক্ষ মাল বাড়ির লোকজন ওই মসজিদের যে খতিয়ান দেখিয়েছে। সেখানে তরুমল্লা মাল বাড়ি জামে মসজিদের নাম রয়েছে। তবে খতিয়ানটি সরেজমিনের নয় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, উভয়পক্ষের সকল কাগজপত্র নিয়ে একটা সমাধানে বসার কথা ছিল। কিন্তু দু’পক্ষের উত্তেজনায় আর বসা হয়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন জানান, বিষয়টি তাকে উভয়পক্ষ অবগত করেছেন। যেকোনো বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছেন।