ভোলায় তিনদিন ধরে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে শহরের কাঁচাবাজারসহ দোকানগুলো পেঁয়াজশূন্য। যে কারণে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতারা ফিরছেন খালি হাতে।
এদিকে সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করতে পেরে আড়ৎদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে আড়ৎদাররা বলছেন, মোকামে পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। কিন্তু আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করলে প্রশাসনের বাধা আছে। তাই মোকাম থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করা বন্ধ করে দিয়েছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলা শহরের কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গত রোববার (৬ অক্টোবর) শহরের কাঁচাবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাড়ে ৩ হাজার কেজি পেঁয়াজ জব্দ করে হয়। অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় ওই সময় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শহরের কাঁচাবাজারের আড়ৎদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে তিনদিন ধরে ভোলা শহরের কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ও দোকানগুলো পেঁয়াজশূন্য। এতে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে সাধারণ ক্রেতারা ফিরছেন খালি হাতে।
সাধারণ ক্রেতা মো. মামুন ও আরিফ হোসেন জানান, ভোলা শহরের বিভিন্ন দোকানে তিনদিন ধরে কোনো পেঁয়াজ নেই। এমনকি কাঁচাবাজারেও পেঁয়াজের দেখা নেই। দোকানে পেঁয়াজ কিনতে গেলে তারা আমাদের বলে ডিসি অফিসে গিয়ে পেঁয়াজ কিনতেন। আমরা এর কারণ জিজ্ঞাস করলে তারা আমাদের বলে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে কি কম দামে বিক্রি করবো নাকি?
শহরের কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. নুরু উদ্দিন জানান, আড়তে কোনো পেঁয়াজ নেই। আমরা পেঁয়াজ কিনতে পারি না। এজন্য ক্রেতাদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারি না।
ভোলা কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পেঁয়াজের আড়ৎদার মো. রফিকুল মিঞা জানান, বরিশালের মোকামে পেঁয়াজের দাম ৭০-৭৫ টাকা। এ দামে কিনে খরচ গিয়ে ভোলার বাজারে আরও ৫-১০ টাকা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হবে। কিন্তু বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করলে প্রশাসন জেল-জরিমানা করে। লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করার চেয়ে না করাই ভালো। এজন্য আমরা পেঁয়াজ বিক্রি আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি। তবে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা চলছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, ভোলার পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাদের দাবি মোকামে পেঁয়াজের দাম বেশি। তবে আমরা বলেছি মোকামের পেঁয়াজ ক্রয় করার সঠিক চালান বা ক্রয়ে রসিদ দেখাতে হবে। সেটি যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর ক্রয় করা দামের চেয়ে ৫ টাকা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করার জন্য আমরা নির্দেশ দেব।