লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে প্রাণ হারানো সাত বাংলাদেশির মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। ইতালির কর্তৃপক্ষ তাদের মরদেহ সেখানেই সমাধিস্থ করতে চাইলেও বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুরোধে তা স্থগিত করা হয়েছে।
ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগরে মারা যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগামীকাল (সোমবার) ইতালিতেই সমাধিস্থ করা হবে বলে যে খবর ছড়িয়েছে, তা সত্য নয়। ইতালি কর্তৃপক্ষ তাদের সমাধিস্থ করতে চেয়েছিল। তবে মরদেহ যে কোনো মূল্যে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে। এতে সম্মতি দিয়েছে ইতালির কর্তৃপক্ষ।
এর আগে দূতাবাসের পক্ষ থেকে মারা যাওয়া সাতজনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মারা যাওয়া সাতজন হলেন- ১. ইমরান হোসেন, গ্রাম পশ্চিম পিয়ারপুর, উপজেলা মাদারীপুর সদর, জেলা মাদারীপুর; ২. জয় তালুকদার ওরফে রতন, গ্রাম পিয়ারপুর, উপজেলা মাদারীপুর সদর, জেলা মাদারীপুর; ৩. সাফায়েত, গ্রাম ঘটকচর, উপজেলা মাদারীপুর সদর, জেলা মাদারীপুর; ৪. জহিরুল, গ্রাম মোস্তফাপুর, উপজেলা মাদারীপুর সদর, জেলা মাদারীপুর; ৫. বাপ্পী, উপজেলা মাদারীপুর সদর, জেলা মাদারীপুর; ৬. সাজ্জাদ, গ্রাম মামুদপুর, উপজেলা জামালগঞ্জ, জেলা সুনামগঞ্জ; ৭. সাইফুল, উপজেলা ভৈরব, জেলা কিশোরগঞ্জ।
২৫ জানুয়ারি লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপে যাওয়ার পথে অতিরিক্ত ঠান্ডায় ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। ইতালি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো ধরনের শনাক্তকারী নথিও ছিল না। ফলে শনাক্তকরণে জটিলতা দেখা দেয়।
সাত বাংলাদেশির পরিচয় নিরূপণের জন্য উদ্ধার করা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মারা যাওয়া সাতজনের পরিচয় পাওয়া যায়।
অবৈধভাবে নৌকাযোগে লিবিয়া থেকে ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন একদল অভিবাসনপ্রত্যাশী। যাত্রাপথে ঠান্ডায় প্রাণ হারান সাতজন। ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ওই নৌকায় যাত্রী ছিলেন ২৮৭ জন, তাদের মধ্যে ২৭৩ জনই বাংলাদেশি।