ভুয়া দুদক কর্মকর্তার দুর্নীতি দমন!

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পাস। কিন্তু তাতে কি, এই যোগ্যতাতেই তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মামলার ভয় দেখাতেন। এভাবে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আনিছুর রহমান ওরফে রুবেল (৩৬) নামে এই ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাজধানীর হাজারীবাগের সনাতন গড় বৌবাজার থেকে আনিছুরকে এবং তাঁর সহযোগী ইয়াসিন তালুকদার (২৩) নবীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২ এর একটি দল। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে তাদের প্রতারণার হাতেখড়ি। তাঁর একজন নেতা রয়েছেন। এই দলে আরও সাত-আটজন সদস্য রয়েছেন। আজ শনিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-৩) মহিউদ্দিন ফারুকী।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এই ব্রিফিংয়ে মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, আনিছুর রহমানের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার লুন্দি গ্রামে। দুদকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের পর প্রতারণার ফন্দি আঁটেন আনিছুর রহমানদের প্রতারক চক্রটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রটি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতেন। প্রাথমিকভাবে তারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে স্ব-শরীরে গিয়ে মোবাইল বা টেলিফোন নম্বর সংগ্রহ করতে শুরু করেন। এভাবে বিভিন্ন দপ্তর থেকে খুব বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে না পেরে তারা সরকারি টেলিফোন ডিরেক্টরী থেকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতে শুরু করেন। তথ্য পাওয়ার পর ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা দুর্নীতির মামলা প্রক্রিয়াধীন বা দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে এমন ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন।

মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, পাঁচ বছরে প্রায় পাঁচ শ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির মামলা রুজুর ভয় দেখিয়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে চক্রটি। অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মোবাইলে বা তাঁদের অফিসে ফোন করে উল্টো ধমক খেয়েছে এই প্রতারকেরা। অনেকে আবার প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। প্রতারক চক্রের প্রধানসহ অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।