ভালোবাসার মানুষটি আমাকে একা করে চলে গেলেন : সাংবাদিক মাসুদের স্ত্রী মালা

:
: ১ বছর আগে

বেশি ভালোবাসা ভালো নয়, হয়তো তাই আমার ভালোবাসার মানুষটি আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন’ বলে স্বামীর দাফনের পরও বিলাপ করছেন ছাত্রীর মাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিক মো. মাসুদ রানার স্ত্রী মালা। তাকে সান্ত্বনা দিতে গেলে ঢুকরে ঢুকরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মালা।

কান্না করতে করতে মালা বলেন, ‘পাঁচ বছরের সংসার জীবনে কোনো দিন আমাকে রাগ ও কষ্ট পেতে দেননি। কখনো আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়নি। কোনো কাজ করার আগে দুজনে আলাপ করেছি। কোনো কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি, সবসময় উৎসাহ ও সাহস জুগিয়েছি। ’

তিনি বলেন, ‘ভালোবাসার এ মানুষটা শুধু আমাকে একা করে যাননি, আমাদের দুই পরিবারের সবাইকে অভিভাবক শূন্য করে দিয়ে চলে গেলেন। ’

মাসুদের সহকর্মী সাংবাদিক নুরুল আমিন রাসেল বলেন, মাসুদ সাংবাদিক হিসেবে নয়, একজন পরোপকারী মানুষ ছিলেন। তিনি তার একজন ছাত্রী লুৎফুন্নাহার লিমার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে চেপে বসেছিলেন সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিনগত রাতে। আর মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে সেই ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনা কবলে পড়ে মাসুদ ও অ্যাম্বুলেন্স চালক-হেলপারসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, মাসুদ লিমাকে এক সময় প্রাইভেট পড়াতেন। সেখান থেকেই লিমার পরিবারের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক হয়। লিমার মা নুরজাহান বেগম (জাহানার) ‍গুরুতর অসুস্থ ছিলেন।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক মাসুদ রানার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় নেওয়া হয়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। পরে জানাজা শেষে তাকে বাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।

মাসুদ আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসিন্দা হলেও পেশাগত কারণে বরিশাল নগরের গোড়াচাঁদ দাস রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাক‌তেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো প্রধান ছিলেন মাসুদ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোরে ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সটি জাজিরায় থেমে থাকা ট্রাকের পেছনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দিলে অ্যাম্বুলেন্সচালক ও হেলপার এবং সাংবাদিক মাসুদসহ ছয়জন নিহত হন।