বিমান চালনা, সাহিত্য এবং অবলা প্রাণীর প্রতি অসাধারণ ভালোবাসাসম্পন্ন এক সাধারণ মেয়ে। ফেসবুক পাতায় নিজের পরিচিতি এভাবেই লিখেছেন পৃথুলা রশীদ। নিজের ভালোবাসার কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে পৃথুলার। গত সোমবার নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজের সহকারী পাইলট ছিলেন তিনি।
মিরপুর ডিওএইচএসে বহুতল ভবনের দোতলায় পৃথুলাদের বাসা। গতকাল মঙ্গলবার ওই ভবনের নিচতলায় দাঁড়িয়ে শোনা যাচ্ছিল কান্নার আওয়াজ। দোতলায় পৃথুলাদের বাসায় গেলে উপস্থিত আত্মীয়স্বজনের কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। পৃথুলার খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে এক যুবক বলেন, বাসার কেউ কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই। পৃথুলার মা-বাবা গত সোমবার থেকে কিছু খাচ্ছেন না। তাঁর মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
পরে পৃথুলার ছোট খালু তৌফিকুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নেপালে যাওয়ার আগে বিমানবন্দর থেকে মাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছিল। পৃথুলার মামা গেছেন মৃতদেহ আনতে। তিনি আরও বলেন, ‘পৃথুলাকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথা হচ্ছে বলে আমরা মিডিয়ার সামনে আসতে চাচ্ছি না। আমাদের মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে, যেটা ঠিক না।’
মা-বাবার একমাত্র সন্তান পৃথুলা। তিনি ইউএস-বাংলার প্রথম নারী পাইলট ছিলেন। পৃথুলার ফেসবুক পাতা থেকে জানা যায়, তিনি ২০১৬ সালের জুলাই মাস থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সঙ্গে যুক্ত। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর তিনি আরিরাং অ্যাভিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিমান চালনার ওপর ডিগ্রি নেন।
আরিরাং অ্যাভিয়েশনের ওয়েবসাইটে থাকা মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, পৃথুলা ২০১২ সালে আরিরাং অ্যাভিয়েশনের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন। দুই বছরের বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল) কোর্স শেষ করে নিবন্ধিত হন।