সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম-এই পাঁচ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সংস্থাটি জানিয়েছে, আরও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপে পরিণত হতে পারে।
মূলত বৃষ্টি ঝড়িয়ে বাংলাদেশে এসে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী (২২ থেকে ৪৩ মিলিমিটার) থেকে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে।
রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগ ছাড়া সব বিভাগেই বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে যশোরে, ৭৬ মিলিমিটার। ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকায় বৃষ্টি ঝরছে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, এ সময়ে পশ্চিমাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং অন্যান্য স্থানে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত কয়েক দিনে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গেছে। রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। বৃষ্টি চলে গেলে এরপর তাপমাত্রা ক্রমাগত কমে শীত জেঁকে বসতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
অপরদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১৪) জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপে পরিণত হবে।
সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে।