এমন বয়সী শিশুরা সাধারণত দুটি বাক্য জোড়া লাগাতেই হিমশিম খায়। কিন্তু চার বছরের অয়ন লিখে ফেলেছে পুরো একটি বই। আর তাতেই ভারতের সর্বকনিষ্ঠ লেখকের মর্যাদা পেয়ে গেছে অয়ন।
পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, অয়নের পুরো নাম অয়ন গগৈ গোহাই। সে থাকে ভারতের আসাম রাজ্যের উত্তর লখিমপুর জেলায়। সম্প্রতি ‘ভারতের সর্বকনিষ্ঠ লেখকের মর্যাদা পেয়েছে সে। দ্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস অয়নকে এই উপাধি দিয়েছে।
ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস নামের সংস্থাটি ভারতজুড়ে বিভিন্ন ব্যক্তির করা অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেয় এবং এর সত্যাসত্য যাচাই করে। সংস্থাটি অয়নকে স্বীকৃতিস্বরূপ একটি স্মৃতিস্মারক ও একটি সনদপত্র দিয়েছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, অয়নের লেখা বইটির নাম ‘হানিকম্ব’। উত্তর লখিমপুর জেলার সেইন্ট মেরি স্কুলে পড়াশোনা করে সে। গত জানুয়ারি মাসে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বইয়ের দাম রাখা হয়েছে ২৫০ রুপি। এতে ৩০টি ছোট ছোট অধ্যায় আছে এবং শিশুটির আঁকা ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
বইটির ভূমিকায় বলা হয়েছে, অয়ন এক বছর বয়স থেকেই আঁকাআঁকি শুরু করেছিল। তিন বছর বয়সে নিজেই ‘গল্প তৈরি’ করতে শিখে ফেলে সে। মূলত শব্দ, রং, স্বাদ প্রভৃতির প্রতি নিজের পর্যবেক্ষণ কাজে লাগিয়ে ‘হানিকম্ব’ বইটি লিখেছে অয়ন।
চার বছরের বয়সের অয়ন গগৈ তার দাদা-দাদির সঙ্গে থাকে। তার বাবা-মা থাকেন মিজোরামে। শিশুটি বলেছে, ‘আমার চারপাশে যা ঘটে, তাই নিয়ে লিখি আমি। এটি যেকোনো কিছুই হতে পারে, যেমন দাদার সঙ্গে কথা বলা বা মাত্র শেখা নতুন কিছু।’
অয়নের জন্ম ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে। তার দাদার নাম পূর্ণ কান্ত গগৈ। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। নাতির কাছে তিনি শ্রেষ্ঠ বন্ধু ও নায়ক। সে বলে, ‘আমার দাদা আমাকে আঁকার অনুপ্রেরণা দেন। নতুন কিছু লেখার উৎসাহ দেন। তিনি আমার রক স্টার। তিনি আমার চকলেট ম্যান।’
নাতির বিষয়ে পূর্ণ কান্ত গগৈ বলেন, ‘আমার মনে আছে, একবার রংধনু দেখে সে একটি কবিতা লিখেছিল। বড় হলে নিশ্চয়ই সে ভালো কিছুই সৃষ্টি করবে।’ তিনি আরও জানান, ‘হানিকম্ব’ বইয়ের প্রচ্ছদও তৈরি করেছে অয়ন।
অয়নের লেখা বই অনেক সাহিত্য সমালোচকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এমন একজন হলেন দিলীপ মহাপাত্র। তিনি বলেন, অয়নের লেখা বেশ জীবন্ত এবং সৃষ্টিশীল। যেকোনো পাঠককে মুগ্ধ করবে এই বই।